সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করা উচিৎ

গোপা ধর | মঙ্গলবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষকতা এক মহান ব্রত। শিক্ষককে হতে হবে শিক্ষাব্রতী, নিরহংকারী, ছাত্রদরদী, সৎ, আদর্শবান, দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী। আবার শিক্ষকদের অনুশাসনও শিক্ষার্থীদের সহ্য করতে হবে। তবে শাসন যেন ক্রোধহীন ও দৃষ্টান্তমূলক হয়। শিক্ষকরা হলেন ছাত্রদের প্রতিষ্ঠালাভের স্থপতি, অনুকরণীয় ও পথচালক। তাঁদের কাছে সমাজের প্রত্যাশা অনেক। শিক্ষক বিচক্ষণতা, বিষয়জ্ঞান ও শিখন পদ্ধতির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর পাঠকে ফলপ্রসূ করে তুলেন। এভাবে ঘাম ঝড়িয়ে গড়ে তুলেন একটা জাতিকে, বিপুল জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করেন। মানুষ গড়ার কারিগর এই শিক্ষকরা আজও অবহেলিত। তারা আজ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। থাকছে রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপও। একসময় সমাজ পণ্ডিতমশাইয়ের নির্দেশে চলতো, এখন পণ্ডিতমশাইরা সমাজের নির্দেশে চলেন। লাঞ্ছিত হওয়ার আগেই সমাজপতিদের সন্তানকে পাস করিয়ে দেন। আমি একজন বেসরকারি কলেজের শিক্ষক হয়ে চরম অনুভূতি নিয়ে এই যন্ত্রণা তুলে ধরলাম। মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সেবামূলক মনোবৃত্তি নিয়ে শিক্ষকরা এই পেশায় আসেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। মেধাবীরা এখন আর এই পেশায় আসার আগ্রহ পায়না। কেননা বেতনের পরিমাণ মানসম্মত নয়। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয়করণ করে শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য দূর করলে, শিক্ষাব্যবস্থায় প্রণোদনা দিয়ে মেধাবীদের এই মহান ব্রতে উৎসাহিত করলে সমাজ এগিয়ে যাবে। পেশাগত উন্নয়নের জন্য শিক্ষকদের যুগোপযোগী ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ, কর্মশালার ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক। উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করা উচিৎ। তাঁদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করতে হবে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে যোগ্যতা, প্রকাশনা, গবেষণা ও দক্ষতা যাচাই করা অনিবার্য বলে মনে করি। বদলি ও পদোন্নতিতে অনিয়ম চোখে পড়ার মতো। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, কতিপয় শিক্ষকদের মধ্যে প্রাজ্ঞ বিবেচনা, স্নেহার্দ আচরণ, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি এইসব গুণাবলীর অনুপস্থিতি লক্ষণীয়। দায়িত্বহীনতা, চাটুকারিতা, চারিত্রিক স্খলন, রাজনীতি ও ভোগ-বিলাসে লিপ্ত হওয়ায় কিছু শিক্ষক দ্বারা শিক্ষক সমাজ আজ কলঙ্কিত। লেখক: শিক্ষক

পূর্ববর্তী নিবন্ধভালোবাসার পরিধি অসীম
পরবর্তী নিবন্ধআপনার ব্যাংক হিসাব কে তদন্ত করতে পারবেন ?