সম্ভাবনা যখন কাউনে লামা ও আলীকদম

লামা প্রতিনিধি | শনিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

লামা ও আলীকদমের পাহাড়ে কাউন চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বাণিজ্যিকভাবে কাউন চাষের উদ্যোগ নিলে এক দিকে যেমন শত শত কৃষক পরিবার স্বাবলম্বী হবে, অপর দিকে পাহাড়ে অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, পাহাড়ি ঢালু জমিতে জুমে ধান চাষের সাথে মিশ্রশস্য হিসেবে সাধারণত জুমিয়া কৃষকেরা কাউন চাষ করে থাকে। কাউন স্থানীয়দের কাছে ‘কৈন’ নামে পরিচিত। এই অঞ্চলে পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের কাছে অতিথি আপ্যায়নে, সামাজিক উৎসব-পার্বণে কাউনের পায়েশের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। বিস্কুট তৈরিতেও কাউন ব্যবহৃত হয়। দানা জাতীয় ফসলের মধ্যে কাউনের কদর পাহাড়ে ও সমতলে সর্বত্রই সমান জনপ্রিয়। এটি পুষ্টির চাহিদা পূরণেও সহায়ক। কাউন থেকে আমিষ ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ হয় বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। জুম চাষীরা জানিয়েছেন, কাউন এক বীজপত্রী উদ্ভিদ। দেখতে অনেকটা সরষে দানার মতো। পাহাড়ে বৈশাখ মাসে জুমে ধানবীজ বোনার সময় কাউন বীজ ছিটানো হয়। তবে জুমিয়াদের কাছে এটি এক প্রকার ধান হিসেবে পরিচিত। কাউন গাছ মাঝারি লম্বা, সবুজ রঙের পাতা, কান্ড শক্ত বিধায় সহজে নুয়ে পড়ে না। এর শীষ লম্বা, মোটা ও লোমশ প্রকৃতির হয়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সব ধরনের মাটিতেই কাউনের আবাদ হয়। পানি জমে না এমন বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভাল ফলন হয়। দেশের উত্তরাঞ্চলে অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত বীজ বপন করা হয়। তবে জুম চাষীরা সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত ঢালু পাহাড়ে জুমচাষের সাথে কাউনের বীজ ছিটিয়ে আবাদ করে থাকেন। কাউনের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে বোনা যায়। সারিতে বীজ বপন করলে চারা পরিচর্যায় সুবিধার পাশাপাশি ফলনও বেশি পাওয়া যায়। প্রতিবিঘা জমি থেকে প্রায় ৩৫০ কেজি পর্যন্ত কাউন উৎপাদন হয়। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি কাউন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বীজ সরবরাহসহ সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে বাণিজ্যিকভাবে কাউন চাষের মাধ্যমে শত শত কৃষক পরিবার স্বাবলম্বী হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্ত্রী ভেবে আরেক নারীকে খুন
পরবর্তী নিবন্ধপৃথিবী এখন কেমন আছে