সমুদ্রের দোষ কী?

চসিক মেয়রের প্রশ্ন

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৭:২৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন(চসিক)-এর বিরুদ্ধে দোষারোপকারীদের উদ্দেশে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, “সমুদ্রে যখন জাহাজ চলে তা যদি নাবিকের অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনাকবলিত হয় তা তো সমুদ্রের দোষ হতে পারে না। অনুরূপ যারা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তারা জননিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করতে না পারলে তা প্রকল্পের দোষ নয়।”

তিনি আজ বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আন্দরকিল্লা নগর ভবনের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে চসিক ষষ্ঠ পরিষদের অষ্টম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।

তিনি নগরে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আন্তঃসংস্থাগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমন্বয় এবং তা সাধন ও সম্পাদনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে কর্তৃত্ব প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “সরকারের ভাবমূর্তি ও প্রকৃত জনস্বার্থ রক্ষায় আমার পূর্বসূরি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যে ভূমিকা পালন করেছিলেন আমি তা করতে চাই। এজন্য দল-মতনির্বিশেষে সবার সহযোগিতা কামনা করি।”

তিনি নির্বাচিত কাউন্সিলরদের ওয়ার্ডে চসিক সহ যে সেবাসংস্থাগুলো কাজ করবে তাদের সেই কাজ সম্পর্কে আগে-ভাগে অবগত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সরকারের মেগাপ্রকল্পসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমন্বয়হীনতার কারণে যে নাগরিক দুর্ভোগ ও সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তা নিরসনে মেয়র রেজাউল সরকারের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তিনি জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে পরপর যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে কষ্ট পেলেও তা লাঘবে আমার ক্ষমতা খুবই সীমিত কারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান বা নির্বাহী প্রতিনিধিরা সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও তার দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি প্রদানের আওতাবহির্ভূত। এক্ষেত্রে চসিক মেয়র হিসেবে সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার বিধিসম্মত দেওয়া অতীব প্রয়োজন বলে মনে করি।

তিনি বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমস্যা ও জনভোগান্তিগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে চসিক ও চউক প্রকৌশলী পর্যায়ে একটি তদারকি কমিটি গঠিত হয়েছিল। এই কমিটি সরজমিনে সমস্যা শনাক্ত করলেও বাস্তব ক্ষেত্রে সমাধানের কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। আরও উদ্বেগজনক হলো, যেখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে এবং ঐ স্থানগুলোতে নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকায় প্রতিনিয়তই দুঃখজনক দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ এর জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(চউক)-এর একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী চসিকের প্রতি দোষারোপ করে যে সব বিদ্বেষমূলক উক্তি গণমাধ্যমে প্রকাশ করছেন তাতে আন্তঃসংস্থা (চউক ও চসিক) বিরোধ সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস বলে মনে করি। এ কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই প্রশ্ন জাগে ঐ প্রকৌশলী কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।

মেয়র বলেন, “দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ, সাংবিধানিকভাবে এই সত্যটি সুস্পষ্ট; সে কারণে রাষ্ট্রের সম্পদ জনগণের নিরাপত্তা দেখভাল করা দায়িত্ব জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের ওপর বর্তায়।”

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ চসিক কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনায় দেশে এক দিনে কমেছে মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধঅপরাধীরা শাস্তি না পেলে এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটবে