বড় রাস্তার একপাশে হাঁটছি। স্বভাবসুলভ প্রকৃতি দর্শন… আমগাছে ছোট্ট ছোট্ট আম! পুরো গাছটায় চোখ পড়তেই, ধুলোময়তা এড়ালো না চোখ। পাশেই লাগোয়া কাঁঠাল গাছ। আমার হাত ধরা ছোটমেয়ে বলতে লাগলো, মাম্মা, কাঁঠাল ধরেছে দেখো! কাঁঠালগুলো গাছের একেবারে শিকড়ের সাথেই লেপ্টে আছে যেনো। বেশ কয়েকটা কাঁঠাল কিন্তু অনেক কচি এখনো। হাঁটতে লাগলাম। গাড়ির জ্যাম। যে পাশ দিয়ে হাঁটছি, লোকজন কিছুটা কম। মনে মনে গান করছিলাম। পিছনে আমার বড়মেয়ে, মেজমেয়ে। হাত ধরাধরি করেই হাঁটছে। হঠাৎ ওদের হাঁটা দেখতে বেশ লাগছিলো আমার! কায়দা করে বললাম, তোমরা আমার সামনে হাঁটো। দু‘জন কতো গল্প করে হাঁটছে! ফিরে গেলাম আমার ছোটবেলায়। আমার ছোটবোন ছিলো না! আহা, আমিও আমার মেয়েদের মতোই গল্প করতে পারতাম! যা–ই হোক, আমরা হাঁটতে হাঁটতে গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। ফেরার পথে আবারো হেঁটেই।
ছোটমেয়ে অপার আনন্দে বারবার হাতছোটা হতে চেষ্টা করছে। ও চায়, বড়দের মতো স্বাধীনভাবে হাঁটতে। কিন্তু কী করে বুঝাই, এটা গ্রামীণ পথ নয়! হাঁটার মধ্যে ও কয়েকবার বলেছিলো, আমরা যেনো ওকে নিয়ে প্রায়ই হাঁটি। নিশ্চিত না করে, আমি না শোনার ভান করে হাঁটছি। ভাবলাম, ওর চাওয়া তো অপরাধের নয়। তবে, প্রায়ই হাঁটতে বের হওয়া কি আসলেই সম্ভব? বাসা থেকে বের হওয়ার পর খেয়াল করলাম, প্রতিটা রাস্তায় কফ, থুথুর ছড়াছড়ি! আমি অবাক হচ্ছি, যারা প্রতিদিন হেঁটে চলাফেরা করে, তাদের অবস্থা কেমন হয়? আমার লম্বা জামা প্রায় আলগা করে ধরে হেঁটেছি সারাপথ! আমার চোখ সজাগ রেখেই প্রতিটা স্টেপ কীভাবে ক্রস করেছি, ভাবছি এখন! এমন না যে, আমি আগে কখনো পায়ে হাঁটিনি! কিন্তু আজকের অবস্থা আসলেই শোচনীয় ছিলো! আমরা প্রত্যেকে একটু সচেতন তো হতে পারি, নাকি? সরকারের দোষ সবকিছুই, তাই না? সত্যিকার অর্থে, আমাদের নিজেদের অবস্থান থেকে সজাগ হওয়ার সময় এখন। দেশে আনুপাতিক হারে বেড়ে চলেছে জনসংখ্যা। শহরে বলতে গেলে, মানুষে ঠাসা এখন। এতো মানুষের মধ্যে নিজেদের কথা বিবেচনায় রেখে হলেও, প্লিজ সতর্ক হতে হবে! আমাদের মুখের কফ, থুথু ফেলার বাটি নিয়ে কেউ বসে নেই রাস্তায়! কিছুটা কাজ নিজেদের মাথা খাটিয়েই করা ভীষণ দরকার। সচেতন হই, দেশ রক্ষা করি। নিজে বাঁচি, অন্যদেরও বাঁচতে সাহায্য করি।