সওজ বলছে ঝুঁকি, ওয়াসার নাকচ

নির্মাণাধীন কালারপোল সেতু ঘেঁষে ওয়াসার গভীর গর্ত

পটিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ৩ জুলাই, ২০২২ at ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ

নির্মাণাধীন কালারপোল সেতুর দুঃখ ঘুচছে না। বর্তমানে নির্মাণাধীন সেতুটির পাশ ঘেঁষে ৩০ ফুট গভীর গর্ত করে ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। এতে করে সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে বলে দাবি করেছে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। তবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তা নাকচ করেছে।
জানা গেছে, সাত বছর আগে বেইলি ব্রিজটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু সেতু তৈরি করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গড়িমসি করে। পরে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সেতুর কাজ শুরু হয়। বর্তমানে কালারপোল সেতুর কাজ ৯৮ ভাগ শেষ হয়েছে। চলতি মাসে সেতুটি উন্মুক্ত করা হবে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, সেতুর পাশে ওয়াসার গভীর গর্ত খোঁড়ার কারণে সেতুর মূল পিলার ভবিষ্যতে দেবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করা উচিত।
তবে ওয়াসার ভান্ডাল জুড়ি প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম বলেন, ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনে যে গর্ত খোঁড়া হচ্ছে তার জন্য সেতুর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কোনো ক্ষতির প্রশ্নই আসে না। সেতু থেকে পাইপ স্থাপনে খোঁড়া গর্তের দূরত্ব ৬৫ ফুটের অধিক। এ দূরত্বে যে কোনো স্থাপনার কোনো প্রকার ক্ষতি হতে পারে না।
পটিয়ার কোলাগাঁও ও আনোয়ারার শিকলবাহা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী স্থানে শিকলবাহা খালের ওপর নির্মিত কালারপোল বেইলি সেতুটি ২০০৭ সালের শেষ দিকে মালবাহী বার্জের ধাক্কায় বিধ্বস্ত হয়। সেই থেকে দুর্ভোগ শুরু। প্রায় ১৫ বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো এলাকাবাসীর দুর্ভোগ যায়নি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, চলতি মাসে শেষ হবে নতুন গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ। এতে ১৫ বছরের ভোগান্তির অবসান হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, কালারপোল সেতুটি ছোট হলেও এর আর্থিক এবং পারিপার্শ্বিক প্রভাব অনেক। বোয়ালখালী ও পটিয়ার আশপাশের লোকজন চট্টগ্রাম শহরে যায় এ পথ দিয়ে। তাদের যাতায়াত সহজ করতে ২০০৪ সালে এ খালের উপর বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। মাত্র তিন বছরের মধ্যে সেতুটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
২০১২ সালের শেষ দিকে ৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশে শুধু বেইলি সেতু বসানোর মাধ্যমে পুনর্নির্মাণ কাজ হাতে নেয় সওজ। বেইলি সেতু নির্মাণের মধ্যে নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সেতু নাম দিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতুটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। পরে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত ৩২০ ফুট অংশে একটি বেইলি সংযোজন করা হয়। ওই সময়ে পৌনে ৪ কোটি টাকার বেইলি বসানোর কাজটি নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১৪ সালের শুরুর দিকে বেইলি সেতুটি ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হলেও লোকজন শুধু হেঁটে পারাপার হতো। ছোট গাড়ির মধ্যে রিকশা ও টেঙি চলাচল ঝুঁকিতে পড়ে।
২০১৮ সালের ১ জুলাই বর্তমান সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঘটে আরেক দুর্ঘটনা। ওই বছরের ২৫ জুন সেতুর দুটি গার্ডার ধসে পড়ে। এতে সেতু নির্মাণ দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে। ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা সেতুটি পাঁচটি পিলারের উপর চার স্প্যান বিশিষ্ট। এর দৈর্ঘ্য ১৮০ মিটার, প্রস্থ ৭.৩ মিটার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনেতাকর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফজলে করিম চৌধুরী এমপি
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬