সংক্রমণের নিম্নমুখী ধারা কতটা স্বস্তির?

৩৫ জেলায় নতুন করোনা রোগী নেই

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। শুক্রবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যু মহামারীর দেড় বছরের মধ্যে ছিল সর্বনিম্ন। শনাক্তের হারও ২২ মাস পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের এই নিম্নমুখী ধারা ধরে রাখতে হলে টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নইলে সংক্রমণ আবারও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ কমে আসার ধারায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জেলায় নতুন রোগী পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যু ও শনাক্ত রোগী আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনায় দেশে ২৩২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়, মৃত্যু হয় ৪ জনের। সর্বশেষ গত বছরের ১৪ এপ্রিল এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল। সেদিন ২০৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। আর এর আগে গত বছরের ৬ মে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে দেখা গেছে, শুক্রবার নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার নেমে এসেছে ১ দশমিক ৩৬ শতাংশে। গত বছরের ২ এপ্রিল দৈনিক শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। সেদিন ১৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শুক্রবার পর্যন্ত দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ১৩৯ জনের মধ্যে। মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৮০৫ জনের। এই চিত্রের মধ্যে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলছেন, আবার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া বিচিত্র কিছু না। এজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। তিনি গতকাল বলেন, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, বেলারুশসহ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ আবার বেড়েছে। কোনো নতুন ভেরিয়েন্টের উদ্ভব হয় বা আগের ভাইরাস থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের চলমান কার্যক্রমে কোনোভাবেই ঢিলেমি করা যাবে না। যত সম্ভব বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। এতে সংক্রমণ ঠেকানো না গেলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যুর হার কমানো যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, এই স্বস্তি সাময়িক না চলমান থাকবে তা নির্ভর করবে করোনাভাইরাস ঠেকাতে গৃহীত কার্যক্রমের ওপর। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যত দ্রুত সম্ভব টিকার কাভারেজ বাড়ানো। যদি দুই-তিন মাসের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যত মানুষ আছে, তাদের ৮০ শতাংশকে টিকা দিতে পারি, তাহলে আমরা একটা স্বস্তির জায়গায় যাব। এরপর আসবে ১৮ বছরের নিচে বাচ্চারা। অর্থাৎ আগামী ছয় মাসের মধ্যে যদি আমাদের ১৮ কোটি মানুষের ৮০ ভাগকে টিকা দিতে পারি তাহলে আমরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারব।
প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে শুক্রবার পর্যন্ত দুই ডোজ কোভিড টিকা পেয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৯৪ হাজার ৪৭৪ জন। টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৬১ হাজার ১৬২ জন। টিকা নিয়ে নিবন্ধন করেছে প্রায় ৬ কোটি মানুষ। প্রাপ্তবয়স্কদের পর সরকার এখন ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদেরও টিকা দেওয়া শুরু করতে যাচ্ছে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর এ মাসেই তা দেওয়া শুরু হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।
৩৫ জেলায় নতুন রোগী নেই : দেশে করোনা সংক্রমণ কমে আসার ধারায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জেলায় নতুন রোগী পাওয়া যায়নি; তবে মৃত্যু ও শনাক্ত রোগী আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২৭৮ জন রোগী শনাক্তের খবর দিছে। তাদের নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ৪১৭। এই সময়ে মারা গেছে ৯ জন, তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৮১৪।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইন্ধনদাতারাই ইকবালকে কক্সবাজার পাঠিয়েছে : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা