শ্রীলঙ্কার গত অর্ধশতকের রাজনীতিতে বুদ্ধিমান ও হাল না ছাড়াদের তালিকা করলে সেখানে ‘দ্য ফক্স’ বা ‘শেয়াল’ নামে সুপরিচিত রনিল বিক্রমাসিংহের মতো হাতেগোণা কয়েকজনের নামই পাওয়া যেতে পারে। বারবার হোঁচট খেলেও কৌশলী ভূমিকার মাধ্যমে প্রতিবারই রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পুনর্জাগরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি; বিরল এ সফলতাই সম্ভবত ৭৩ বছর বয়সী এ রাজনীতিককে এমন ডাকনাম জুটিয়ে দিয়েছে বলে ধারণা গার্ডিয়ানের। খবর বিডিনিউজের।
১৯৭৭ সালে রাজনীতিতে প্রবেশের পর ছয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, কিন্তু কী ভাগ্য তার, একবারও মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। পেশায় আইনজীবী রনিল ১৯৯৩ সালে প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসা হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম প্রধানমন্ত্রীত্ব পেয়েছিলেন, কিন্তু পরের প্রতিবারের মতো সেবারও মেয়াদ শেষ করতে পারেননি তিনি।
তিনি পশ্চিমাপন্থি সংস্কারক হিসেবে বেশ পরিচিত। ২০০১ সালে দ্বীপদেশটিকে মন্দার হাত থেকে বের করে আনায় তার কৃতিত্ব এখনও বিস্মৃত হয়ে যায়নি। শহুরে মধ্যবিত্তের মধ্যে তার জনসমর্থনও ব্যাপক। নিজেকে ‘পরিচ্ছন্ন’ রাজনীতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠার জেদ থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগ তার পিছু ছাড়েনি। যদিও সব অভিযোগেই তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন। প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া রনিলের জীবনের ৪৫ বছরই পার্লামেন্টে পদচারণা। তিনি প্রথম এমপি হন ১৯৭৭ সালে, মাত্র ২৮ বছর বয়সে।
দ্বীপদেশটির অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে ‘বেইলআউটের’ আলোচনাকে দ্রুত সফলতার দিকে নিয়ে যেতে হবে তাকে। মেটাতে হবে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির ঘাটতি; হাতে বিদেশি মুদ্রা না থাকায় গত কয়েকমাস ধরেই এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করতে পারছিল না শ্রীলঙ্কা। এই ঘাটতি আর ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি শ্রীলঙ্কাকে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে। রনিল কী পারবেন, ডুবন্ত এই দ্বীপদেশটিকে টেনে তুলতে?