বিএনপির জন্য অপেক্ষা করবেন সিইসি

নির্বাচনী সংলাপ

| বৃহস্পতিবার , ২১ জুলাই, ২০২২ at ৭:২৩ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে বিএনপি সংলাপে না এলেও দলটির জন্য অপেক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের চতুর্থ দিনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সিইসি জানান, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তিনি ইতিবাচক মনোভাব দেখেছেন। তার আশা, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা নেবে। পাশাপাশি ইসির চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।

গতকাল বুধবার সকালে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে বিকালে বিএনপির সঙ্গে বসার সূচি ঠিক করে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে আগের দিন মঙ্গলবারই ইসিকে না বলে দেওয়া হয়। এর আগে ইভিএম নিয়ে ইসির মতবিনিময় সভাতেও দলটি যোগ দেয়নি। খবর বিডিনিউজের।

গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকরা বিএনপির এই অবস্থানের বিষয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উত্তরে তিনি শুধু বলেন, আমরা ওয়েট করব। চার দিনে ১১টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি, আমন্ত্রণ পাওয়া দুটি দল আসেনি। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে এই বৈঠক শেষ করার কথা রয়েছে ইসি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো পার্টি সংলাপে অংশ নিয়েছে, তাদের সকলের মনোভাব ইতিবাচক। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার যাতে প্রয়োগ করতে পারেন, এ বিষয়টি তারা নিশ্চিত করতে বলেছেন। আমরাও বলেছি, সত্যিকার অর্থে এটিই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব যে প্রত্যেকটা ভোটার যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এটাই গণন্ত্রের ভিত্তি। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন এবং প্রতিটি দলই বলেছে তারা ঐকমত্যে বিশ্বাস করে। ঐকমত্য তো হতেও পারে, নাও হতে পারে।

রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে দলগুলোকে প্রচেষ্টা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা বলেছি আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখব। এ বিষয়ে কেউ না করেনি; প্রয়াসটি অব্যাহত থাকবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, ঐক্যটা আমাদের নয়, আমরা রাজনৈতিক দলগেুলোকে বলেছি, আপনারা ঐক্যের চেষ্টা করুন এবং ঐক্য হলে আমরা আনন্দিত হব।

ইসির প্রতি কিছু রাজনৈতিক দলের যে অনাস্থা, এই সংলাপের মধ্য দিয়ে তা দূর হবে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ইসির প্রতি অনাস্থা সবসময় আছে বা নাই দুটো জিনিস। আপনারা তো পেপারেই দেখছেন, একটা দলের হয়ত অনাস্থা আছে। আবার আমাদের সাথে যারা বসেছে, তাদের প্রত্যেকের আমাদের প্রতি আস্থা আছে। সংলাপ শেষ হলে এই আলোচনার সারসংক্ষেপ সবাইকে অবহিত করা হবে বলে জানান সিইসি।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ড. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ১০ জন প্রতিনিধি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপে অংশ নেন। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কোনো খেলা নয়, ইসি রেফারিও নয়। ইসির দায়িত্ব হচ্ছে অভিভাবকের। কোনো দল নির্বাচনে এল কি এল না, তা কমিশনের দায়িত্বও নয়। ভোটাররা যেন নির্ভিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে ইসিকে। এবার আর কাউকে দায় দেওয়া যাবে না, দায় নিতে হবে কমিশনকে। নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি সংলাপে উপস্থাপন করে দলটি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরও বিকেলে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির আসা- না আসা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, উনারা (বিএনপি) এলে ভালো হত। নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা তো বারেবারেই উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছি। আগেও ইভিএম এর বিষয়ে যোগাযোগ করেছি, আসেননি। এখন যে সংলাপ, সে বিষয়েও যোগাযোগ করেছি, আসেননি। সামনে যোগাযোগ আবারও থাকবে। এ বিষয়ে ভোটের আগ পর্যন্ত ইসির অব্যাহত প্রয়াস থাকবে বলে মন্তব্য করেন আলমগীর। বিএনপির জন্যে কতদিন অপেক্ষা করা হবে- এমন প্রশ্নে মুচকি হেসে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রীলঙ্কাকে টেনে তোলার দায়িত্ব রনিল বিক্রমাসিংহের হাতে
পরবর্তী নিবন্ধহালদায় ফের মরা ডলফিন