ঈদের আগমনী সংগীত শুনতে পাচ্ছি। ঈদের কত সুর আছে, একটা সুর শৈশবের। সেটিই সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে মধুর। একটি জামা, একজোড়া জুতা, আতর, কিউটিকুরা পাউডার, আহা কী খুশবু। সবচেয়ে বেশি খুশবু মায়ের আঁচল। সবচেয়ে সুন্দর মায়ের সুরমামাখা চোখ, সবচেয়ে মায়াময় দৃশ্য আব্বার আতরমাখা পায়জামা পাঞ্জাবি। আহা ঈদ এসে টোকা দিচ্ছে। সুরমা নেই, আতর নেই, কারো আঁচল নেই, পায়জামা পাঞ্জাবি নেই। এখন আমাদের মাথার উপরে বটের ছায়া নেই। মুরব্বিদের দলে আমাদের নাম লিখা হয়ে গেছে। ইদানীং আমাদের চেয়ে বয়সী তেমন কারুকে চোখে পড়ে না। ঈদে, বিয়েতে, মেজবানে, আমাদের মতো বয়সীদের সমাবেশ। আর আছে আমাদের নেক্সট জেনারেশন। ওদের সাথে আমাদের ফারাক একশত বছর। ওরা চোখে সুরমা কী চেনে না। আতরের গন্ধ সহ্য করতে পারেনা। তারা ঈদের দিনেও দিনভর ঘুমাতে পারে। আর্ট পেপার কিনে রং পেন্সিল দিয়ে ছবি এঁকে ঈদ মোবারক লিখার আনন্দে আবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করে টিটনি কলম দিয়ে লিখি ‘ঈদ মোবারক’। শুধু একটা জামা সারারাত বালিশের নিচে লুকিয়ে রেখে ঈদের দিন সকালে সবাইকে চমকে দিতে ইচ্ছে করে। ঈদ সংখ্যার হরেক রকম যেমন বিচিত্রা, অন্যদিন, রোববার, সচিত্র সন্ধানী, পূর্বাণী, চিত্রালী, বেগম। এই সব ম্যাগাজিনগুলোর সাথে ঈদের আনন্দ ঘরে ঢুকে পড়ত দ্বিগুণ আনন্দে। এই রকম মোটা বইগুলো কিনে শুয়ে শুয়ে পড়তে মন চায় আবারও। সেই উপন্যাস, সেই গল্প, সেই কবিতা! নায়ক নায়িকার ছবি। আহা সেই ঈদসংখ্যার দিনগুলো, কাড়াকাড়ি দিনগুলো! কে কার আগে পড়বে, সেই সব দিনগুলো!