শেষ দুই ওভারে ঢাকার জয় কেড়ে নিল চট্টগ্রাম

বিফলে গেল তামিম ইকবালের অপরাজিত ইনিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

শেষ দুই ওভারের নাটকে দারুণ এক জয় তুলে নিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বলা যায় ঢাকার হাতের মুঠোই থাকা জয়টা ছিনিয়ে নিল চট্টগ্রাম। তামিম ইকবালের দুর্দান্ত অপরাজিত ইনিংসটি বিফলে গেল। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে ঢাকাকে ৩ রানে হারিয়ে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল চট্টগ্রাম। জয়ের দুয়ারে থাকা ঢাকা শেষ দুই ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি তরুণ দুই বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ও মৃত্যুঞ্জয়ের দুর্দান্ত বোলিংয়ে। পুরো সময় ক্রিজে থেকে ৫৬ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেও তামিম মাঠ ছাড়লেন শেষ ওভারে স্ট্রাইক না পাওয়ার হতাশায়। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রাম শুরুতেই হারায় আসরে প্রথম খেলতে নামা জাকির হাসানকে। বিপিএল অভিষেকে প্রথম ওভারে উইকেট পান আফগান বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকি। তিনি ফেরান প্রথম খেলতে নামা জাকিরকে। আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস এবং এ ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া আফিফ গড়েন ৪০ রানের জুটি। তবে দুজনের কেউই পারেননি দ্রুত রান তুলতে। ২৪ বলে ২৬ করে ফিরেন জ্যাকস। সমান ২৬ বলে ২৭ রান করে ফিরেন আফিফ। ২ রান করে ফিরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আকবর আলিও পারেননি দলের এই কঠিন সময়ে হাল ধরতে। তিনি ফিরেছেন ৯ রান করে। ৮৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর হাল ধরেন শামীম হোসেন এবং বেনি হাওয়েল। দুজন মিলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন। আর এ দুজনের জুটিতে দেড়শর কাছাকাছি যায় চট্টগ্রামের ইনিংস। বিপিএলে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করা শামীম ফিরেন এক বল বাকি থাকতে। আর শেষ বলে ছক্কা মেরে চট্টগ্রামের স্কোর ১৪৮ রানে নিয়ে যান বেনি হাওয়েল। ৩৭ বলে ৫২ রান করে ফিরেন শামীম। তিনি ৫টি চার এবং একটি ছক্কা মারেন। হাওয়েল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ২৪ রান করে। শেষ ৪ ওভারে চট্টগ্রাম সংগ্রহ করে ৫১ রান। ঢাকার পক্ষে ছয় বোলারের প্রত্যেকে নিয়েছেন একটি করে উইকেট। ১৪৯ রান খুব বড় স্কোর নয়। কিন্তু মাত্র ২১ রানে যখন তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ফিরে আসে তখন লক্ষ্যটা কঠিন হওয়ারই কথা। ১০ রানে ফিরেন ওপেনার শাহজাদ। ১৯ রানে ফিরেন ইমরান উজ জামান। ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে চার নম্বরে নামা মাশরাফি ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। পাওয়ার প্লে শেষে ঢাকার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২২ রান। কিন্তু শুরু থেকে এক প্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে ৭১ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম। দারুন এক ক্যাচে মাহমুদউল্লাহ ফিরে এলে শুরু হয় ঢাকার পতন। ২৯ বলে একটি চারের সাহায্যে ২৪ রান করেন ঢাকার অধিনায়ক। শুভাগত হোমকে নিয়ে ৪৫ রানের আরেকটি জুটি গড়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তামিম। শুভাগত হোম উইকেটে যাওয়ার পর রান-বলের সমীকরণও সহজ হয়ে আসে অনেকটা। কিন্তু ১১ বলে দুইটি চার এবং একটি ছক্কায় ২২ রান করা শুভাগত হোম আউট হলে শুরু হয় শেষ সময়ের নাটক। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে শরিফুলকে ছক্কা মেরে ঢাকার জয়ের লক্ষ্যকে আরো সহজ করে তোলেন শুভাগত হোম। তখন প্রয়োজন ছিল ১১ বলে ১৪ রান। ছক্কার পরের বলেই শরিফুলের বলে বোল্ড হয়ে যান শুভাগত। নতুন ব্যাটসম্যান কাইস আহমেদ প্রথম বলে সিঙ্গেল নিতে পারলেও তামিম টানা দুই বলে পারেননি রান নিতে। শেষ বলে চার মেরে আবার ম্যাচ জমিয়ে তোলেন তামিম। শেষ ওভারে ঢাকার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ৯ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যা মোটেও কঠিন কিছু নয়। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান কাইস আহমেদ। এরপর নাঈম শেখ পরপর দুই বলে পারেননি রান নিতে। চতুর্থ বলটি ওয়াইড করেন মৃত্যুঞ্জয়। পরের দুই বলে তামিম এবং নাঈম মাত্র দুই রান নিতে সক্ষম হয়। আর তাতেই জয়ের উল্লাসে মাতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অপর প্রান্তে হতাশায় সে উল্লাস তাকিয়ে থাকেন তামিম। কাজে আসেনি তার ৫৬ বলে ৬টি চার এবং তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ রানের ইনিংসটি। ১৪৫ রানে থামে ঢাকা। চট্টগ্রামের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয় এবং শরীফুল ইসলাম। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শামীম হোসেন। এই ম্যাচ জিতলে প্লে অফ নিশ্চিত হয়ে যেত ঢাকার। এখন তারা পড়ে গেল দোলাচলে। আপাতত টিকে রইল চট্টগ্রামের আশা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিজেকেএস তায়কোয়ানডো লিগ ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৬৩.৭ কোটি টাকা