শুল্ক বাধায় ভারতীয় বন্দরে আটকে আছে ১০ লাখ টন চাল

| শনিবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ

রপ্তানিকারকরা ভারতের নতুন আরোপ করা ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে রাজি না হওয়ায় দেশটির বন্দরগুলোতে প্রায় ১০ লাখ টন চাল আটকে আছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচজন রপ্তানিকারক জানিয়েছেন, চুক্তির নির্ধারিত দামের বাইরে কোনো মাশুল দিতে না চাওয়ায় বন্দর থেকে জাহাজে কোনো চাল বোঝাই হচ্ছে না। নিজেদের বাজারে চালের যোগান বাড়াতে এবং দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ধরনের চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি ভাঙা চাল বা খুদ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। রপ্তানি শুল্কের তালিকা থেকে সিদ্ধ ও বাসমতি চাল বাদ রাখা হয়। গতকাল শুক্রবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
অল ইন্ডিয়া রাইস এঙপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইআরইএ) সভাপতি বিভি কৃষ্ণ রাও বলেন, মাঝরাত থেকে শুল্ক কার্যকর হয়, কিন্তু ক্রেতারা তা দিতে প্রস্তুত নয়। আমরা জাহাজে চাল ওঠানো বন্ধ রেখেছি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত প্রতি মাসে প্রায় ২০ লাখ টন চাল রপ্তানি করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চালান যায় কাকিনাদা এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তমের মতো পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরগুলো থেকে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি এর আগে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে বলে জানান, ভারতের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সত্যম বালাজির নির্বাহী পরিচালক হিমাংশু আগারওয়াল। তিনি জানান, সরকারের নীতি পরিবর্তনের তারিখের আগে ঋণপত্র (এলসি) কিংবা আমদানির বিপরীতে অর্থ পরিশোধের চুক্তিগুলো বাড়তি শুল্কের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিল। কিন্তু এবার সেটা ঘটেনি উল্লেখ করে হিমাংশু আগারওয়াল বলেন, চালের ব্যবসায় লাভ খুবই সামান্য এবং রপ্তানিকারকদের বাড়তি ২০ শতাংশ শুল্ক দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এরই মধ্যে যেসব এলসি ইস্যু করা হয়েছে সরকারের উচিত তার বিপরীতে রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া।
তিনি জানান, চলতি বছর গম রপ্তানিতে যখন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তখন আগে থেকে যেসব এলসি ইস্যু করা হয়েছিল তাদের রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল নয়াদিল্লি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুক্রবার থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর করায় বন্দরগুলোতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টন সাদা চাল পড়ে আছে।
রয়টার্স জানায়, খুদ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির আগে শুল্ক বিভাগে যেসব চালান পৌঁছেছে কিংবা বৃহস্পতিবারের আগে যেসব জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে তাদের খুদের চাল নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে ভারত। তবে ১৫ সেপ্টেম্বরের আগে সেসব চাল জাহাজে ওঠাতে হবে। তবে এর বাইরে অন্তত সাড়ে তিন লাখ টন খুদের চাল বিভিন্ন বন্দরে পড়ে আছে।
যেসব কার্গো এসব চাল নেওয়র জন্য রওনা দিয়েছে তাদের ফিরে যাওয়া সম্ভব না বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি ভিত্তিক আন্তর্জাতিক একটি বাণিজ্য সংস্থার ডিলার।
আফ্রিকার কিছু দরিদ্র দেশ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে খুদের চাল আমদানি করে। তবে মূলত হাঁস-মুরগি বা মাছের খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই ভাঙা চাল।
পৃথিবীর ১৫০টির বেশি দেশে চাল রপ্তানি করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত। দেশটিতে চলতি বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের আবাদ কম হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেবিল ফ্যান চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে কিশোর অপরাধ ভয়ংকর