শুভ জন্মদিন প্রিয় ‘আজাদী’

নিগার সুলতানা | রবিবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

৫ সেপ্টেম্বর ২০২১। শুভ জন্মদিন প্রিয় ‘আজাদী’। আমি চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তোমাকে জানাই ফুলেল শুভেচ্ছা। আজ দৈনিক আজাদী ৬১ বছর পেরিয়ে ৬২ বছরে পদার্পণ করলো।এই দৈনিক আজাদী পত্রিকা ১৯৬০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রকাশিত হয়। চট্টগ্রামে আজাদী পত্রিকা প্রথম দৈনিক পত্রিকা নয়। আরো অনেক দৈনিক পত্রিকা রয়েছে। তবে আজাদীর মত অর্ধশতাধিকের বেশি সময় অন্য কোনো পত্রিকা দীর্ঘজীবী হয়নি। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক। এমন একটি কৃতিত্বের দাবিদার হচ্ছেন চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেক। আমি আজ তাঁকে শ্রদ্ধা সহকারে স্মরণ করছি এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এই রতনের ঘরে আরেক রতনের জন্ম নিল। এই আজাদীকে দীর্ঘজীবী করার পেছনে যাঁর অবদান রয়েছে তিনি হচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের সুযোগ্য পুত্র আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক। আমি তাঁকে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধা সহকারে স্যালুট জানাচ্ছি। তাঁর অগাধ পরিশ্রম, নিষ্ঠা,একাগ্রতা, পিতার স্বপ্নের প্রতি সম্মান, চট্টগ্রামবাসীর প্রতি ভালোবাসা আজ আজাদীকে ৬২ বছরে পদার্পণ করে দীর্ঘজীবী করতে সাহায্য করেছে। তিনি কয়েক বছর আগে (BBC NWS/বাংলা) এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাবার পত্রিকা বিলি করার মত হকার ছিল না বলে তিনি সাইকেলে চেপে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বাড়ি এই আজাদী পত্রিকা পৌঁছে দিতেন। তিনি আরো বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরদিন সকালে অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বর একটাই পত্রিকা বের হয়, সেটি হচ্ছে দৈনিক আজাদী। আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক এমন যোগ্য সন্তান রেখে গেছেন বলেই দীর্ঘ ৬১ বছর ধরে চট্টগ্রামবাসীর ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে দৈনিক আজাদী পত্রিকা। ইতিহাস থেকে জানতে পারি, আজাদী হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা। ছোট বেলা থেকে আমার বাবাকে আজাদী পত্রিকা পড়তে দেখেছি। আমার মা একজন সাহিত্যিকের মেয়ে ছিলেন এবং একজন কবি ছিলেন বলে আজাদী পত্রিকা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতেন। আমার মায়ের মুখ থেকে শুনেছিলাম আজাদী পত্রিকার আগে সাপ্তাহিক কোহিনূর পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক। সেই কোহিনূর পত্রিকায় কিশোরী বয়স থেকে আমার মায়ের বেশ কিছু কবিতা ছাপানো হয়েছিল। পরে আজাদীতেও ছাপানো হয় আমার মায়ের কিছু কবিতা। সেই রক্তের টানে আমিও আজাদীর প্রেমে পড়ে গেলাম কিশোরী বয়স থেকে। সকাল বেলার এক কাপ চায়ের পাশে আজাদী না হলে সকালটা বড্ড ফিকে মনে হয়। আমার ঘরের জানালা ভেদ করে যেমন ভোরের সূর্যের আলো ঢুকে পড়ে, তেমনি ভোরের বার্তা নিয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ে আমার প্রিয় আজাদী। এই আজাদী আমাকে জানিয়ে দেয় আমার চট্টগ্রাম কেমন আছে। এই আজাদী জানিয়ে দেয় আজ আবহাওয়া কেমন হবে। এই আজাদী জানিয়ে দেয় আমার দেশটি কেমন আছে আর কেমন হতে যাচ্ছে, আরো কত কি। এই আজাদী আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল কত গুণিজন আর কত কবি সাহিত্যিকের সাথে। আজাদী তোমার কাছে কৃতজ্ঞ আমি। তোমার কাছে শিখেছি অনেক, জেনেছি অনেক। তাই প্রিয় ‘আজাদী’ তোমার জন্মদিনে তোমাকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা। তুমি দীর্ঘজীবী হও, হাজার বছর তুমি বেঁচে থাকো আমাদের মাঝে, নব প্রজন্মের হদয় জুড়ে। এমন একটা ঐতিহ্যবাহী পত্রিকা দীর্ঘ দিন যাবৎ ধরে চট্টগ্রামবাসীকে উপহার দেওয়ার জন্য আমি চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আজাদীর কর্তৃপক্ষ, সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিয় আজাদীর জন্য শুভ কামনা
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে