শুক্র একেবারে পানিশূন্য হয়ে যাচ্ছে কেন?

| শুক্রবার , ১০ মে, ২০২৪ at ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ

সূর্য থেকে দূরত্বের হিসাবে সৌরজগতের দ্বিতীয় অবস্থানে আছে পৃথিবীর প্রতিবেশী গ্রহ শুক্র। এই পার্থিব গ্রহটিকে অনেক সময় পৃথিবীর বোন গ্রহ বলেও ডাকা হয় কারণ পৃথিবী ও শুক্রের মধ্যে গাঠনিক উপাদান এবং আচরণে বড় মিল রয়েছে। একসময় গ্রহটিতে পানি থাকলেও এখন তা একেবারে পানিশূন্য।

কিন্তু কেন? : সমপ্রতি শুক্র নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কার করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারএর গবেষকরা। মূলত নিজের চরম আবহাওয়ার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত পৃথিবীর প্রতিবেশি গ্রহটি। গবেষণায় গবেষকরা এমন তথ্য খুঁজে পেয়েছেন, যা শুক্রে পানিশূন্যতার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে। পৃথিবীতে জীবনধারণের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা সবারই জানা।

গবেষণার বিভিন্ন ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল নেচার, যেখানে শুক্রের বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন এমন প্রক্রিয়া পাওয়া গেছে, যার ফলে সম্ভবত গ্রহটি থেকে পানি হারিয়ে গেছে। শুক্র ও পৃথিবী আকারে প্রায় সমান। একসময় ধারণা করা হত, গ্রহ দুটিতে একই পরিমাণ পানি আছে। তবে এখন পৃথিবীর তুলনায় একেবারে শুষ্ক গ্রহটি।

বিষয়টিকে কল্পনা করা যেতে পারে পৃথিবীর সব পানিকে যদি ভূপৃষ্ঠে সমানভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে, যা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার গভীর একটি স্তর তৈরি হতে পারে। তবে শুক্রের বেলায়, ওই স্তরের গভীরতা মাত্র তিন সেন্টিমিটার।

শুক্রের বায়ুমণ্ডলের রসায়ন নিয়ে গবেষণা করতে গবেষণা দলটি বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করেছে, যেখানে গ্রহটিকে বিবেচনা করা হয়েছে এক বিশাল পরীক্ষাগার হিসেবে। এজন্য (হাইড্রোজেন, কার্বন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত) নামের একটি অণুর ওপর মনযোগ দিয়েছিলেন গবেষকরা, যা শুক্র থেকে পানি অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে সন্দেহ তাদের।

কলোরাডোভিত্তিক পরীক্ষাগার ল্যাবরেটরি ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যান্ড স্পেস ফিজিক্স (এলএএসপি)-এর গবেষণা বিজ্ঞানী ও গবেষণার সহপ্রধান লেখক এরিন ক্যাঙ্গির ব্যাখ্যা অনুসারে, শুক্র কীভাবে নিজের পানি হারিয়েছে তা বোঝা ছায়াপথের অন্যান্য গ্রহের পানি ধারণ সংশ্লিষ্ট তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

যে প্রক্রিয়ায় শুক্র থেকে পানি হারিয়েছিল, তা ডিসসোশিয়েটিভ রিকম্বিনেশন নামে পরিচিত, যার সম্পৃক্ততা রয়েছে বায়ুমণ্ডলে অণু ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে। ভাঙ্গনের ফলে হাইড্রোজেন পরমাণু নির্গত হয়, যা পরবর্তীতে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুদ্ধবিরতি অর্জনে ইসরায়েলের সঙ্গে আর আপস করবে না হামাস
পরবর্তী নিবন্ধবাইডেনের হুঁশিয়ারির পরও রাফায় ইসরায়েলের গোলাবর্ষণ