শীতের রূপ ও শৈশব স্মৃতি

পিয়াসা দাশ গুপ্তা | রবিবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছি। উদ্দেশ্য হচ্ছে অনেকদিন পর বাপের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আর শীতের আমেজ উপভোগ করবো বলে। কিন্তু আগের সেই শীত যেন হারিয়ে গেছে। হয়ত বয়সের কারণে কিংবা ঋতু পরিবর্তনের কারণে বুঝতে পারলাম না। সেই কনকনে শীতের কারণে লেপ মুড়ি দিয়ে বসে থাকা শৈশব স্মৃতি এখন অনেক দূরে। তাই সুকান্তের কবিতার অংশ ‘হে সূর্য হিম শীতলে সুদীর্ঘ… মনে মনে আবৃত্তি করে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম। উঠে দেখি হঠাৎ হিমেল বাতাসে ভেসে আসা মিষ্টি শীত ঋতুর সৌরভ আমাকে মুগ্ধ করে। কৌতূহল হয়ে বাইরে এসে দেখলাম পাশের বাড়িতে উনুনে খেজুর রসের পিঠে বানানো হচ্ছে। মনে পড়ল, আগেকার সময়ে আমরা, শীতের প্রতি সকালে বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ার কথা। শীত সকালে বান্ধবীদের সাথে সরিষা ক্ষেতে হাঁটার কথা। কিন্তু এখন দেখলাম শিশিরভেজা মেঠো পথে কেউ হাঁটেনা, করোনা ভাইরাস বা অন্যকোনো জীবাণু আক্রমণ করার ভয়ে। আমরা তখন শিশির ভেজা মাঠে খালি পায়ে হেঁটে বেড়াতাম, দুর্বাঘাসের ডগায় নানা রঙের ঝলমল শিশির কনার দৃশ্য উপভোগ করতাম। ছোট বেলায় আমাদের কাছে শীতের ভয় আসেনি। আমরা ঠাণ্ডায় খুব একটা বিচলিত হতাম না। বর্তমানে নগর জীবনে ইট পাথরের চার দেয়াল আর অহরহ গাড়ির শব্দে শীতের প্রভাবটা গ্রামের তুলনায় খানিক কম অনুভূত হয়। শীত এলেই মনে পড়ে ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা। গ্রামের সেই শীতের সকাল আজও হৃদয়কে টানে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে প্রকৃতির খুব কাছে সেই শৈশব দুরন্তপনা প্রান্তরে।
লেখক: গৃহিণী

পূর্ববর্তী নিবন্ধঠান্ডা মিয়ার হাসপাতাল
পরবর্তী নিবন্ধভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে সৃজনশীলতায়