শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে পদক্ষেপ নিন

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম | মঙ্গলবার , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

প্রতি সকালের কুয়াশা আর ঠাণ্ডা হাওয়া জানান দেয়, শীত আসে সারা গাঁ জুড়ে। পাখিরা গাছের ডালে জবুথবু হয়ে আছে। জমে আছে ঘাসের উপর শিশির বিন্দু। তবে আগের চেয়ে এখন শীতের আমেজ অনুভব হয় কম সময়। বিশ্বব্যাপী নানা দূষণের কারণে উত্তপ্ত হচ্ছে পৃথিবী। উষ্ণতা বাড়ছে। বাড়ছে সমুদ্রস্তর। ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে দ্রুতই। স্বাভাবিকভাবে যার প্রভাব পড়ছে আমাদের দেশেও।
প্রতি বৎসর শীতকাল আমাদের মাঝে আসে। এসময় বেশি কষ্টে ভোগে দরিদ্র মানুষ। যৎসামান্য সাহায্য তারা পায় তা দিয়ে কোনভাবেই তাদের কুলোয় না। কষ্ট সহ্য করেই দিন পার করতে হয়। শীতে উত্তরাঞ্চল, দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও গ্রামাঞ্চলে সাত-সকালে দেখা মিলবে অসংখ্য দুঃখী মানুষের। দেখা যাবে, সেথায় তারা খোলা আকাশের নীচে গায়ে ছালা আর শরীরের কাপড় জড়িয়ে কোনমতে শুয়ে আছে। ক্ষণে ক্ষণে ঠাণ্ডায় কুঁকড়ে উঠছে। পাশে কুকুর, বেড়ালের আনাগোনা। করোনার কারণে এবার শীতার্ত মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে। যে কারণে করোনার এই কঠিন দিনের শীতে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি।
শীতে অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতে দেখা যায় অনেককে যা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। কেবল মিডিয়া কভারেজ কিংবা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যদি এই সাহায্য হয় তাহলে তা কখনো সুফল বয়ে আনবে না। সাহায্য, সহযোগিতা হতে হবে নিঃস্বার্থ, সৎ উদ্দেশ্যপূর্ণ। শীতার্ত মানুষের সাহায্যার্থে প্রথমে এগিয়ে আসার কথা রাষ্ট্রের। নানা সংস্থা, সংগঠনকেও শীতার্ত অসহায় মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে বিত্তশালী ও সামর্থ্যবান সব মানুষকেও। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শীতার্ত দরিদ্র মানুষকে খুঁজে বের করতে হবে।
অবশ্য স্ব-উদ্যোগে এবং নির্মোহ মনোভাব নিয়ে অনেকে শীতার্ত মানুষের পাশে এগিয়ে আসেন। যা আমরা বিভিন্নভাবে দেখতে পাই। চেষ্টা করেন সরকার,বেসরকারি অনেক সংস্থাও। কিন্তু যতটুকু এগিয়ে আসার কথা ততটুকু হচ্ছে না। সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে বাদ পড়ে যাবে অনেক দরিদ্র শীতার্ত মানুষ। এজন্য দেশব্যাপী শীতার্ত মানুষের একটি তালিকা করা যেতে পারে। এ কাজে প্রয়োজনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনকেও কাজে লাগানো যায়। তালিকা ধরে প্রত্যেক শীতার্ত মানুষের কাছে শীতবস্ত্র ও আর্থিক সাহায্য পাঠানোর কাজটি সরকার করতে পারে। তবে, শীতার্ত মানুষের এসব বস্ত্র, অর্থ সহ সব সাহায্য যেন দুর্নীতিমুক্ত ও সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দুর্গতজনদের কাছে পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে হবে। বিতরণ ব্যবস্থা যেন ত্রুটিমুক্ত হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। অন্যান্য সংস্থাও তাদের মতো করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকন্যাসন্তানকে অবহেলা নয়
পরবর্তী নিবন্ধস্মৃতিতে অম্লান এক কিংবদন্তি : অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্বে কর্মবীর মহিউদ্দিন চৌধুরী