শিশু হৃদরোগের বিশেষায়িত চিকিৎসা এখন এভারকেয়ারে

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১১ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:৫৯ অপরাহ্ণ

প্রতি হাজারে ৮ থেকে ১০ জন শিশু জন্মগত হৃদরোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু মা-বাবারা বুঝতেই পারেন না যে, তাদের শিশু সন্তানটি হৃদরোগে আক্রান্ত। শিশুর হার্টেও বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে, ছিদ্র থাকতে পারে। বলতে গেলে বেশির ভাগ মা-বাবা এ বিষয়ে সচেতন নন। যার কারণে শিশুর বয়স বাড়লে এ রোগ আরো জটিলতর হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। কথাগুলো বলছিলেন এভারকেয়ার হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজির (শিশু হৃদরোগ) সিনিয়র কনসালটেন্ট এন্ড কো-অর্ডিনেটর ডা. তাহেরা নাজরিন।

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন তিনি। তবে বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতাল, চট্টগ্রামেও মাসে একবার করে রোগী দেখা শুরু করেছেন। গত শুক্রবার চট্টগ্রামে এসে ৭৮ জন শিশু রোগী দেখেছেন শিশু হৃদরোগের বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক। গতকাল আজাদীর সাথে আলাপকালে শিশুদের হৃদরোগ, আক্রান্তের ঝুঁকি, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডা. তাহেরা নাজরীন। তিনি জানালেন, মায়ের গর্ভে থাকার সময়েও শিশুর কোনো ধরণের হৃদরোগ আছে কী না, তা জানা সম্ভব। একটি পরীক্ষার (ফিটাল ইকোকার্ডিওগ্রাফির) মাধ্যমে খুব সহজেই এটা নির্ণয় করা যায়। গর্ভধারণের ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে এ পরীক্ষাটা করাতে পারলে সবচেয়ে ভালো।

জন্মের আগেই ডায়াগনোসিস (নির্ণয়) করা গেলে এর চিকিৎসাটা সহজ হয়ে যায় বলে জানান ডা. তাহেরা নাজরীন। এই চিকিৎসক বলেন, প্রসবকালীন মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে এবং উচ্চ রক্তচাপের (হাইপারটেনশান) ওষুধ গ্রহণসহ আরো বেশ কয়েকটি কারণে শিশুর হৃদরোগে আক্রান্তের আশঙ্কা থাকে। আর জন্মের পর বেশ কিছু লক্ষণ দেখা গেলে ওই শিশুর হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। স্বল্প ওজন (আড়াই কেজির কম ওজন) নিয়ে শিশুর জন্ম, শিশুর ঘন ঘন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া এবং স্বাভাবিক ভাবে শিশুর ওজন বৃদ্ধি না পাওয়া এসব লক্ষণের মধ্যে অন্যতম। এ ধরণের লক্ষণ দৃশ্যমান হলে ওই শিশুর হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। তাই এসব লক্ষণ দেখা গেলে যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্টের (শিশু হৃদরোগ) কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ ডা. তাহেরা নাজরীনের।

বিশেষ প্যাকেজ : শিশু হৃদরোগ সচেতনতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা। যা এখনো চলমান রয়েছে। এই অফারের আওতায় মাত্র ২২০০ টাকায় শিশুদের ইকোকার্ডিওগ্রাফির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ফ্রি-ডিভাইসের মাধ্যমে শিশুর হার্টে জন্মগত ছিদ্র বন্ধ করা এবং ফ্রি বেলুনের মাধ্যমে সরু ভাল্‌ভ এবং এওর্টা সারানো। প্যাকেজের আওতায় ৭০ হাজার টাকায় এ চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের। ঢাকার এই প্যাকেজ শীঘ্রই চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালেও চালু করার কথা জানালেন ডা. তাহেরা নাজরীন। যদিও ইকোকার্ডিওগ্রাফির সুযোগ চট্টগ্রামে ইতোমধ্যেই চালু করা হয়েছে জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, শিশু হৃদরোগের চিকিৎসায়ও আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। এখন কিছু হলেই চিকিৎসার জন্য আগের মতো দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ঘরের দুয়ারেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সুবিধা হাজির করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল। তবে আর বিদেশ কেন যাওয়া?

পূর্ববর্তী নিবন্ধউখিয়ায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ৭ রোহিঙ্গা গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধপা পিছলে পুকুরে পড়ে শিশুর মৃত্যু