শিশুদের নিয়ে

জেবারুত সাফিনা | বৃহস্পতিবার , ৮ জুলাই, ২০২১ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

একান্নবর্তী পরিবারগুলোতে শিশুদের খাওয়ানো ও ঘুমপাড়ানোর সময় রকমারি ছড়াগাথার ব্যবহার ছিলো। এখনকার দিনে আর্থসামাজিক অবস্থায় একান্নবর্তী পরিবার বিলুপ্ত প্রায়। সিঙ্গেল ফ্যামিলিতে নূতন মায়েরা শিশুদের ঘুম পাড়াতে “বেবী বাউন্সার” নামের ছোট্ট দোলনা চেয়ার ব্যবহার করছে।
শিশুর ঘুমের আয়োজনে ‘দুলুনি’ একটি অপরিহার্য শর্ত সাথে সেই প্রাচীনকালের ঘুমপাড়ানি গান। “দোলনায় দোলে শিশু ঘুম ঘুম ভাব / পাপড়ির নামাওঠা শ্বাসে উত্তাপ / দুলতে দুলতে ভ্রমে ঘুমের দেশ, /তুলতুলে মুখখানায় রয় হাসির রেশ।”
ঠোঁটের কোণটায় হাসির মৃদু রেশ ধরে রেখে শিশু ঘুমের রাজ্যে হারায়। নিপল থেকে চুষে নেয়া দুধের শেষফোঁটাগুলো মুখের ভেতর নিয়ে গভীর ঘুমের মাঝে চুষতে থাকে মৃদু শব্দে, বড়োই আহ্লাদে।
তখন আমরা আদর করে বলি ফেরেশতারা ঘুমের ভেতর তাকে আদর করে ফুলের মধু পান করাচ্ছে বলে এমন শব্দ করছে সে। মানুষ কল্পনা ভালোবাসে তাই শিশুর জন্মের পর তার প্রতিটা নড়াচড়া, চোখের পাপড়ি মেলা, হাত-পা নাড়া –
সবকিছুই আমরা সুবচনে প্রকাশ করে আসছি সেই আদি পরিবার থেকে।
চাঁদের স্নিগ্ধ কিরণের সাথে, ফুল, পাখি, প্রজাপতি– মূলত প্রকৃতির সব সুন্দর উপকরণের সাথে আমরা শিশুর তুলনা করে ছড়ায় ছড়ায় আনন্দ বিলিয়ে শিশুদের বড়ো করে তুলি। তার প্রথম বুলি, শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের প্রথম সাড়া, দাঁড়াতে গিয়ে ভূতলে লুটিয়ে পড়া, কয়েক পা এগুতে গিয়ে বসে যাওয়া — এভাবে তার সবকিছুতেই যেনো অনাগত ভবিষ্যৎ দোল খেতে থাকে, আমাদের মন আলোড়িত হয় এক মধুর স্বপ্নিল আবেশে। তখন আমরাও তাদের সব অঙ্গভঙ্গি ছড়ায়, ছবিতে, ভিডিও রেকর্ডারে ধরে রাখতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি। আকাশের ঐ চাঁদ হার মেনে যায় আমাদের গৃহের একটুকরো চাঁদের কাছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৃষ্টির জন্য জনদুর্ভোগ
পরবর্তী নিবন্ধপৃথিবীর মানচিত্রে উন্নয়নের রূপকার