শিক্ষায় সুযোগ চাই, চাকরিতে যোগ্যতা

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম | বুধবার , ৪ নভেম্বর, ২০২০ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। যাকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতির শিখরে পৌঁছতে পারে না। নানা কারণে শিক্ষার সুযোগ সমানভাবে সবাই পায় না। গ্রাম ও শহর কিংবা ধনী ও অসচ্ছল পরিবারের মানুষের মাঝে শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে বিরাট ফারাক। কেউ সহজ ও স্বাভাবিকভাবে শিক্ষার অধিকার লাভ করে, আবার কেউ আর্থিক অসচ্ছলতা ও নানা কারণে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও অনেকের পক্ষে উচ্চশিক্ষা লাভ সম্ভব হয়ে উঠে না। সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছে শিক্ষার আলো প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক সময় তা বাধাগ্রস্ত হয়। পারিবারিক ও সামাজিক কারণেও সেটা হতে পারে। এতদসত্ত্বেও আমাদেরকে শিক্ষা বিস্তারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করতে পারলে এবং গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পরিবারের অন্তত একজন সদস্যকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিলে শিক্ষার প্রসার দ্রুততর হবে বলে মনে করি। গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের অধিক সংখ্যক বিদ্যালয়ে গমন নিশ্চিত করতে উপবৃত্তি কার্যক্রমকে কঠিন শর্তের বেড়াজাল থেকে সহজতর করা উচিত। দারিদ্র্য বিমোচনে নেওয়া উচিত যুগোপযোগী পরিকল্পনা। শিক্ষার প্রসারে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গের এগিয়ে আসা উচিত। শিক্ষা অর্জনের পর শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি হয় চাকরি নামক সোনার হরিণের। সেখানেও চলে তুমুল প্রতিযোগিতা। পদের চেয়ে চাকুরিপ্রার্থীর সংখ্যা হয় বহুগুণ বেশি। সেক্ষেত্রেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ে। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে যদিও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে বেশিরভাগ নিয়োগ হয়ে থাকে তথাপি সেখানেও বিভিন্ন সময় দুর্নীতির কথা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাতে মামু-খালুদের দাপটের কাছে অনেকে পরাস্ত হয়! অনেক সময় পদের বিপরীতে অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তিরা নিয়োগ পেয়ে যায়। যা কিনা পরবর্তীতে সরকার ও দেশের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করে। এ ব্যাপারে সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। চাকরিতে সবার সমান সুযোগ তথা যোগ্যরাই যাতে নিয়োগ পায় সেজন্য নিয়োগ প্রক্রিয়াকে শতভাগ স্বচ্ছ করার কোন বিকল্প নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্দিষ্ট প্রতিনিধি দলের শঙ্কায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা
পরবর্তী নিবন্ধধর্ষণ প্রতিরোধে প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা