শিক্ষকের মর্যাদা সর্বত্র সবসময়

ড. শিরীণ আখতার ও লায়ন্স গভর্নর টিমসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আজাদী সম্পাদক

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও প্রাক্তন লায়ন্স জেলা গভর্নর লায়ন এম এ মালেক বলেছেন, একজন শিক্ষক একটি জাতিকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। কারণ একজন শিক্ষকই স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীর জীবনের মূল ভিত্তিটা গড়ে দেন। তার শেখানো সেই দিকনির্দেশনা ভবিষ্যতে জীবনকে পরিচালিত করতে কাজে লাগে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং ডায়মন্ড সিটির উদ্যোগে আগ্রাবাদের একটি রেস্টুরেন্টে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও লায়ন্স গভর্নর টিম’স-২০২১-কে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। এম এ মালেক সংবর্ধেয় ব্যক্তিত্ব ড. শিরীণ আখতার প্রসঙ্গে বলেন, নিজের যোগ্যতা বলে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছেন। তিনি একাধারে একজন শিক্ষক এবং একজন মা। শিক্ষকের মর্যাদা সর্বত্র সবসময়। কারণ তিনিই দিকনির্দেশনা দেন ভবিষ্যতে কী হবে। আইনস্টাইনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, স্কুলে যা শেখানো হয় তা ভুলে যাওয়ার পর যা মনে থাকে সেটাই শিক্ষা। স্কুল-কলেজ থেকে শিক্ষক যে ভিত্তিটা গড়ে দেন বাস্তব জীবনে গিয়ে তা ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি সংবর্ধেয় ব্যক্তিত্ব একজন মা। নেপোলিয়ন বলেছেন, একজন ভালো মা একটি জাতিকে গড়ে দেন। সেদিক থেকেও ড. শিরীণ আখতার সফল। এম এ মালেক বলেন, জীবন কখনো থেমে থাকে না। একজন যাবে, একজন আসবে। এটাই জীবনের মূল মন্ত্র। লায়নিজমের ক্ষেত্রেও সে কথা প্রযোজ্য। পুরনোদের বিদায়ে থেমে যাবে না লায়নিজম, নতুনরা এসে ঠিক হাল ধরবে। তবে সেবার মনোবৃত্তি থাকতে হবে।
সংবর্ধিত ব্যক্তিত্ব চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি অভিভূত। যে মানুষ কোনো কিছু পাওয়ার আশায় জীবনে কিছু করিনি, সেই আমাকে আপনারা সংবর্ধনা দিচ্ছেন। আমি লায়নিজম থেকে তিনটি জিনিস শিখেছি। সময়ানুবর্তিতা, মানবতার সেবা এবং দুস্থ মানুষের কাছে এগিয়ে যাওয়া। লায়নিজমের শিক্ষা অনেক সুন্দর।
বেগম রোকেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া যদি এগিয়ে না আসতেন, তবে আমরা মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারতাম না। তিনি কিন্তু তাঁর কাজের স্বীকৃতি পাননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁর নামে পদক চালু করেছেন পাঁচটি ক্যাটাগরিতে। আমি শিক্ষা ও সাহিত্যে মূল্যবান এ পদকটি পেয়েছি। কাজ করে গেছি কাজের নেশায়। কোনো ঘাটে গিয়ে আমার তরী ভিড়বে সে চিন্তা করিনি। কোনো কাজই বিফলে যায় না। পদক পেয়ে দায়িত্বটা আরো বেড়ে গেছে।
লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং ডায়মন্ড সিটির সভাপতি লায়ন মিজানুর রহমান মজুমদারের সভাপতিত্বে এতে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন লায়ন্স জেলা গভর্নর লায়ন আল সাদাত দোভাষ, দ্বিতীয় ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন এম ডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন আশরাফুল আলম আরজু ও কেবিনেট ট্রেজারার লায়ন আবু বক্কর সিদ্দিকী, রিজিয়ন চেয়ারপারসন (ক্লাব) লায়ন জাহানারা বেগম ও জোন চেয়ারপারসন (ক্লাব) লায়ন অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি লায়ন ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম ফজলুল্লাহ, প্রাক্তন লায়ন্স জেলা গভর্নর লায়ন নাসির উদ্দিন ও লায়ন মনজুর আলম মনজু। স্বাগত বক্তব্য দেন লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং ডায়মন্ড সিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও রিজিয়ন চেয়ারপারসন (হেডকোয়ার্টার) লায়ন চৌধুরী শামীম মোস্তফা। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন লায়ন্স জেলা গভর্নর ডা. শ্রীপ্রকাশ বিশ্বাস, লায়ন মোস্তাক আহমেদ, লায়ন কামরুন মালেক, প্রাক্তন লেডি গভর্নর ডা. রোজী বিশ্বাস, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির প্রিন্সিপাল ক্যাপ্টেন ওয়াসিক মাকসুদ, লায়ন রোসাঙ্গীর বাচ্চু প্রমুখ।
লায়ন্স জেলা গভর্নর লায়ন আল সাদাত দোভাষ সংবর্ধেয় ব্যক্তিত্ব চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার প্রসঙ্গে বলেন, আপনি দেশের গর্ব, চট্টগ্রামের গর্ব, লায়নিজমের গর্ব। লায়নিজমের কার্যক্রম চলছেই। উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের কার্যক্রম।
লায়ন ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, লায়নিজমের মাধ্যমে একটা সোশ্যাল স্ট্রাকচার গড়ে উঠেছে। সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব এসবের শিক্ষা পেয়েছি লায়নিজম থেকেই।
প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন মনজুর আলম মনজু উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার প্রসঙ্গে বলেন, যে অর্জন তিনি করেছেন, তার স্বীকৃতি বিস্তৃত তাঁর কর্মপরিসরে। যাকে আজ সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে, তাঁকে দেখে নারীরা উদ্বুদ্ধ হবেন। নারীর ক্ষমতায়ন আজ প্রতিষ্ঠিত, সময় এসেছে নারীর সমতায়নের।
প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন মো. নাসির উদ্দিন বলেন, লায়নিজমের অন্যতম একটি শর্ত সময়ানুবর্তিতা। এ বিষয়টি আমাদের সবাইকে মেনে চলতে হবে।
দ্বিতীয় ভাইস জেলা গর্ভনর লায়ন এম ডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সব সেবার ঊর্দ্ধে মানবতার সেবা। এটাই লায়নিজমের শিক্ষা। আজ উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে সংবর্ধিত করা হচ্ছে। এতে আমরা সকল লায়ন আজ গর্বিত।
স্বাগত বক্তব্যে লায়ন চৌধুরী শামীম মোস্তফা বলেন, আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে ঝাউতলা এতিমখানায় ৩৪০ জন শিশুর ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করেছি। আকবর শাহতে অন্ধদের নিয়ে কাজ করছি। আগামী অক্টোবরে ছাগলনাইয়াতে দুস্থদের জন্য দশটা বিল্ডিং নির্মাণ করে দিচ্ছি। আগামীতে আমাদের কর্ম পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬