শহীদ সাবের : এক অসমাপ্ত কবিতার নাম

| রবিবার , ৩১ মার্চ, ২০২৪ at ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

শহীদ সাবের (১৯৩০১৯৭১)। সাংবাদিক ও লেখক, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। প্রকৃত নাম এ কেএম শহীদুল্লাহ। লেখক নাম শহীদ সাবের। তিনি ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই ডিসেম্বর কক্সবাজারের ঈদগাঁ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সালামতউল্লাহ এবং মা শফিকা খাতুন। ঈদগাঁ প্রাইমারি স্কুলে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নের পর তিনি পিতার কর্মস্থল কলকাতায় হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশভাগের পর তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে অধ্যয়ন করেন এবং ওই স্কুল থেকে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিক পাস করেন। আইএ ক্লাসে ভর্তি হন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। স্কুলে পড়ার সময়ই শহীদ সাবের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হন। কলকাতার পার্ক সার্কাসের বালুহক্কাক লেনে ‘ছোটদের আসর’ নামে একটি সংগঠন ছিল। শহীদ সাবের ছিলেন এই সংগঠনের লাইব্রেরিয়ান। এ সময় তিনি ছন্দশিখা নামের একটি দেয়াল পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ম্যাট্রিক পাশের পর তিনি চট্টগ্রামে মুকুল ফৌজ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কলেজে অধ্যয়নকালে শহীদ সাবের প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। পাকিস্তানের মুসলিম লীগ সরকার কম্যুনিস্ট পার্টির কর্মীদের ব্যাপকভাবে গ্রেফতার শুরু করলে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রাজশাহী সেন্ট্রাল জেল থেকে আই এ পাস করেন। চার বছর অন্তরীণ থাকার পর ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মুক্তিলাভ করেন। শহীদ সাবের ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। এরপর ঢাকার ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলে কিছুকাল সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির পর তিনি দৈনিক সংবাদএর সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। এসময় তিনি ফেডারেল ইনফরমেশন সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। কিন্তু রাজনৈতিক বন্দি থাকার কারণে তাঁকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে শহীদ সাবেরের মানসিক বৈকল্য ঘটে। তিনি আর সুস্থ হন নি। শহীদ সাবেরের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে: কারাগারে বসে লেখা আরেক দুনিয়া থেকে (কলকাতার নতুন সাহিত্য পত্রিকায় চৈত্র ১৩৫৭ সংখ্যায় প্রকাশিত), গল্প সংকলন এক টুকরো মেঘ (১৯৫৫), শিশুসাহিত্য ক্ষুদে গোয়েন্দার অভিযান (১৯৫৫), অনুদিত গ্রন্থ ইসকাপনের বিবি, পাগলের ডায়রি, কালো মেয়ের স্বপ্ন। শহীদ সাবের দৈনিক সংবাদ অফিস ভবনেই থাকতেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে মার্চ সকালে পাকিস্তান সেনারা সংবাদ অফিস পুড়িয়ে দিলে আগুনে পুড়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচলাচলে জনজীবন নিরাপত্তা চাই