লালখান বাজারে দিনভর সংঘর্ষ

নিজের ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভে ভোট বর্জন মনির

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

নিজের ভোট দিতে না পারার ক্ষোভে ভোট বর্জন করেছেন ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৫ এর বিএনপি সমর্র্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম মনি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট চলাকালে গতকাল দুপুর ১২টায় নগর মহিলা দলের সভানেত্রী মনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাসহ সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপি সমর্থকদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। আমি নিজেও ভোট দিতে পারিনি। তাই নির্বাচন বর্জন করলাম।
লালখান বাজার মোড়ে কথা হয় মনোয়ার বেগম মনির সাথে। তার পাশেই শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র। সকাল ৯টা থেকেই কেন্দ্রটির সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল ও বিদ্রোহী এফ কবির আহমেদ মানিকের অনুসারীদের। এছাড়া লালখান বাজারের আরো বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে এই দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়। সেখানে মনির অনুসারীদের সাথেও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ, বিদ্রোহী ও বিএনপির অন্তত ৩০ জন আহত হন বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।
মনির ওপর হামলা : সকাল ১০টায় শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রের প্রবেশমুখে জটলা। মনোয়ারা বেগম মনি ভোটকেদ্রে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে বাধা দেন আবুল হাসনাত বেলালের অনুসারীরা। এক পর্যায়ে মনির সাথে থাকা মহিলা কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ধাওয়া দিয়ে মনিকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। কয়েকজনকে মনি ও তার অনুসারীদের দিকে ইট ছুড়ে মারতে দেখা গেছে। এসময় মনির মেয়ে মাথায় আঘাত পান।
সকাল থেকে রণক্ষেত্র : এর আগে সকালে লালখান বাজারে কাচের বোতল, লোহার রডসহ বিভিন্ন ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান করে আবুল হাসনাত বেলাল ও এফ কবির আহমেদ মানিকের অনুসারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে গুলি ছোঁড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে কেন্দ্রে প্রবেশ করার পর দেখা যায়, ভোটারের কোনো লাইন নেই। মাঝেমধ্যে দুয়েকজন ভোট দিতে আসছেন। জাহানারা মুন্নি নামে এক ভোটার জানান, পুলিশই আমাকে ভোট দিতে দেয়নি। তিনি ব্যালট প্যানেলে চাপ দিয়ে দেন।
স্কুলটিতে দুটি কেন্দ্র। একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বশির আহমেদ জানান, সব প্রার্থীর এজেন্ট নেই। ভোটারের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ এমন অভিযোগ করেনি।
অপর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার নীহার রঞ্জন বলেন, বাইরের ঝামেলার প্রভাব কেন্দ্রে পড়েনি।
বেলা সোয়া ১১টায় সেখানে আসেন ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সমস্যা হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সিনিয়র অফিসারদেরও মোতায়েন করা হয়েছে এখানে। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে সবাই যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের সিটি ভোট চূড়ান্ত তামাশা : রিজভী
পরবর্তী নিবন্ধভোট হয়েছে আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে : খসরু