লাঠি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের হাত ভাঙলেন আরেক শিক্ষক

সরকারি আলাওল কলেজ

বাঁশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালীতে সদ্য সরকারি হওয়া সরকারি আলাওল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ সোলেমানকে লাঠির আঘাতে হাত ভেঙে দিয়েছেন আরেক শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আজিজুর রহমান। তিনি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ও অধ্যক্ষের আরেক দাবিদার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

গতকাল বুধবার সকালে কলেজের অভ্যন্তরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আহত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুইজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আজিজুর রহমান (৪২) ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমানকে (৫৮) আসামি করেন।

জানা যায়, বুধবার সকালে অধ্যক্ষের পাশের কক্ষ অফিস সহকারীর রুমে কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আজিজুর রহমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নানা উত্তপ্ত কথা বলে ‘আমাকে কেন পরীক্ষাসহ বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হচ্ছে’ এ প্রশ্ন করে একটা লাঠি নিয়ে হাতে আঘাত করেন। এ সময় অন্য শিক্ষকেরা ক্লাসে থাকায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিষয়টি বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরীকে জানালে তিনি আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।

ঘটনার ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ সোলেমান বলেন, আমি কলেজে দায়িত্ব পালনকালে আমার পাশের রুমে ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আজিজুর রহমান নানা ধরনের কথা বলে হঠাৎ আমাকে একটা লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। আমি ধরে ফেলায় বাড়িটি মাথায় না পড়লেও হাতে প্রচণ্ড আঘাত পাই। পরে বাঁশখালী হাসপাতালে এঙরেসহ চিকিৎসা রিপোর্ট নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। এর আগেও কলেজে নানা অনিয়ম করাতে শিক্ষকদের পরামর্শে ঐ শিক্ষককে পরীক্ষা কমিটিতে রাখা হয়নি।

ঘটনার ব্যাপারে জানার জন্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আজিজুর রহমানকে নিজ মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

সরকারি আলাওল কলেজের সভাপতির দায়িত্বে থাকা বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ঘটনার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ সোলেমান এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন। তাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগেও কলেজে এ শিক্ষকের সঙ্গে সমস্যা হয়েছিল। কলেজের শিক্ষার স্বার্থে আমরা মীমংসা করেছিলাম। আজকের ঘটনায় অ‌ভি‌যোগ দিলে তদন্ত সা‌পে‌ক্ষে ব্যবস্থা নে‌ওয়া হ‌বে বলে তি‌নি জানান।

উল্লেখ্য, আলাওল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইদ্রিস বিগত ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মো. শাহ আলম আজাদ। তিনি ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর অবসরে গেলে কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ সোলেমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাঁশখালীর সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার তিনদিন পর তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পত্র প্রেরণ করে। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী মোহাম্মদ সোলেমান।

কিছুদিন পর একই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমানও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে আসীন হতে চাওয়াকে কেন্দ্র কলেজে শিক্ষকেরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। তা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে আবেদননিবেদনের পর অধ্যক্ষের দাবিদার দুজনের পক্ষে হাইকোর্টেও রিট করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাহাদাতসহ বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে ৪৪২ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ