রোহিঙ্গাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বানে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

| শুক্রবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২২ at ৪:০৬ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের ‘মানবিক’ প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যৌথভাবে সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। ১০৯টি দেশ এ প্রস্তাবে সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ। খবর বিডিনিউজের। বিবৃতিতে বলা হয়, রেজুশেলনটি বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং বাংলাদেশের গৃহীত মানবিক
প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের উপর মানবাধিকার লক্সঘনের জন্য ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ, আইসিসি, আইআইএমএম ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা নিরূপণকারী ব্যবস্থার সাথে যেভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে তা প্রসংশিত হয়েছে এতে। ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে এবারের রেজুলেশনে।
সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার সময় বাংলাদেশের শার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মো. মনোয়ার বলেন, প্রত্যাবর্তনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি পাওয়ার দাবি রাখে। এই মানবিক সাড়াদান প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানের সমস্যার কথা তুলে ধরে মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা মানবিক বিবেচনায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম, ব্যস্তচ্যুত এ জনগোষ্ঠীর সবসময়ই মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়- উভয় ফ্রন্টে বহুমুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে, যাতে মিয়ানমারে নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তন উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য নেতৃত্ব দেওয়ায় ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মো. মনোয়ার।
ওই প্রস্তাবে প্রাথমিকভবে কয়েকটি বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যার আরও অবনতি হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করার পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সবগুলো মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে রেজুলেশনে। এছাড়া মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে আঞ্চলিক দেশ ও সংস্থাগুলো- যেমন আসিয়ান’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে সর্বসম্মতিক্রমে আসিয়ান গৃহীত পাঁচ দফা সুপারিশের দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরত্ব দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের এ রেজুলেশনটি রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি বিভিন্ন অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি প্রকাশের একটি অনন্য উদাহরণ। মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে যাওয়ায় দেশটিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হচ্ছে যা ‘উদ্বেগজনক’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ি পথে ট্রাক্টর উল্টে চালকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধব্র্যাকের স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নাম এখন বিএসআরএম স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং