রোজার কষ্টকে হাল্কা করতেই সেহেরির বিধান

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | বুধবার , ২৯ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজানের রোজাকে সহনীয় ও হাল্কা করতেই রোজাদারের জন্য শেষ রাতে সেহেরির বিশেষ ব্যবস্থা রাখা রয়েছে। প্রতিদিন শেষ রাতে আরামের শয্যা ত্যাগ করে রোজাদারদের ঘরে ঘরে সেহেরি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। সারা দিন ১২/১৪ ঘণ্টা ধরে উপোস থাকতে গিয়ে রোজাদাররা যাতে কাহিল হয়ে না ওঠে সেজন্যই সেহেরি খাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বি🙂 নবী করিম (.) হতে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা সেহেরি খাও, সেহেরিতে বরকত আছে’ (বুখারি শরিফ : ১৮২৩)। যদি কোনো ব্যক্তি সেহেরি খাওয়া ছাড়াই রোজার নিয়ত করে নেয়, তাতেও তার রোজা হয়ে যাবে। তবে সে সেহেরির বরকত পাবে না। (ফতোয়া শামি ৩/৪০০)। সেহেরি শেষ সময়ে খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এতো দেরি করা যাবে না, সময়ের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে যায়। ফজর নামাজের আজান পর্যন্ত সেহেরি খাওয়া উচিত নয়। আজানের সময় তথা ফজরের সময় শুরু হওয়ার আগেই সেহেরি খাওয়া শেষ করতে হবে। সেহেরির শেষ সময়ের ৮/১০ মিনিট পরই ফজরের আজান ধ্বনিত হয় মসজিদ থেকে। এর আগেই সেহেরি খাওয়া শেষ করার অভ্যাস রপ্ত করতে হবে। যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, গরিব ও অসহায় এমন রোজাদারকে সেহেরি খাওয়ানো, সেহেরি ও ইফতারি পণ্য কিনে দেয়া অতীব পুণ্যময় আমল। কোনো রোজাদারকে সেহেরি খাওয়ালে রোজা রাখার মাধ্যমে সে যা পুণ্য পাবে, অনুরূপ সমান পুণ্যের ভাগিদার হবেন যিনি সেহেরি খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। প্রিয় নবী () বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তি সহকারে আহার করাবে, আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাউজে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্ব পর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না।’ (মুসনাদে আহমদ)

রোজার আজ ৬ষ্ঠ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। এখন চলছে রহমতের দশক। এ মাসে বেশি বেশি দান সদকাহর মাধ্যমে আল্লাহপাকের নৈকট্য অর্জনের সুযোগ লুফে নিতে হবে প্রতিটি সচ্ছল রোজাদারকে। রোজার মাসে জাকাত দিতে হবে এমন ধরাবাঁধা নিয়ম না থাকলেও অধিক সওয়াবের আশায় ধনী রোজাদারগণ রমজান মাসেই জাকাত দিয়ে থাকেন। এটা উত্তম পন্থা নিঃসন্দেহে। তবে, আমাদের দেশে জাকাত ফিতরা দেয়া হয় রোজার একেবারে শেষের দিকে। তা কিন্তু ঠিক নয়।

গরিব দুস্থদেরকে রোজার শুরুর দিকে হিসেব করে জাকাত ফিতরা দেওয়া হলে তারা পুরো রোজার মাসটা স্বাচ্ছন্দে হাশি খুশিতে কাটাতে পারেন। এখন থেকেই গরিব দুখী বিপন্ন অসহায় মানুষের মাঝে জাকাতের টাকা বণ্টন করে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে সচেষ্ট হোন। আল্লাহপাক কোরআন মজিদে বলছেন, ‘ওয়াফি আমওয়ালিহিম হক্কুল লিস্‌্‌সায়েলে ওয়াল মাহরুম’। অর্থাৎ-‘ধনীর ধন সম্পদে গরিবের হক বা অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত : ১৯ নং আয়াত)। তাই হকদার গরিব খুঁজে খুঁজে জাকাতের টাকা এখনই প্রদানে সচেষ্ট হোন। এতে আল্লাহপাক আপনার ওপর সদয় হবেন এ আশা করা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক পরিবারের তিনজনের বেশি ব্যাংক পরিচালক নয়
পরবর্তী নিবন্ধপূর্বাঞ্চলের জন্য ১১৬ ইঞ্জিন