রেল সংযোগ স্থাপিত হবে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর ও পতেঙ্গা বে-টার্মিনালে

রেল সচিবের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন

শুকলাল দাশ | শুক্রবার , ১৪ জুলাই, ২০২৩ at ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর এবং পতেঙ্গায় প্রস্তাবিত বেটার্মিনালে রেল সংযোগের পরিকল্পনা নিয়েছে রেলওয়ে। ইতোমধ্যে রেল সংযোগ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং ডিটেইল ডিজাইনিংয়ের কাজও শেষ হয়েছে। গত সোমবার রেল সংযোগের বিষয়টি নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পরিদর্শন করেছেন। রেলওয়ের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে রেল সংযোগ দেয়ার জন্য মাত্র সাড়ে ১৩ কিলোমিটার রেললাইন নতুন করে নির্মাণ করতে হবে রেলওয়েকে। ঢাকাচট্টগ্রাম রেল লাইনের বড়তাকিয়া স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীর দূরত্ব সাড়ে ১৩ কিলোমিটার। অপরদিকে রেলওয়ের চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে পতেঙ্গায় প্রস্তাবিত বেটার্মিনালের দূরত্ব ৫ কিলোমিটারের মতো। সিজিপিওয়াই থেকে বেটার্মিনালে রেল সংযোগ স্থাপিত হবে।

এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা বলেন, ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ আমরা করেছি। সচিব স্যার মীরসরাই শিল্পনগরী পরিদর্শন করেছেন। এটা নিয়ে ২০১৯ সালে সম্ভা্যতা যাচাই হয়েছিল। এটাকে এখন আরো আপডেট করতে হবে। ঢাকাচট্টগ্রাম রেল লাইনের মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়ায় আমাদের স্টেশন আছে। এই বড়তাকিয়া থেকে মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে সংযোগ স্থাপিত হবে। অপরদিকে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে নগরীর পতেঙ্গায় প্রস্তাবিত বেটার্মিনালে রেলওয়ে সংযোগ স্থাপিত হবে।

চট্টগ্রাম বেটার্মিনাল থেকে মালবাহী ট্রেনে পণ্য মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে আসবে। সেখান থেকে আবার মালবাহী ট্রেনে ঢাকায় চলে যাবে। আবার বেটার্মিনাল থেকেও ট্রেনে করে সরাসারি ঢাকায় এবং মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরী থেকেও সরাসারি ঢাকায় পণ্য যাবে।

প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা আরো বলেন, চট্টগ্রাম বেটার্মিনাল থেকে মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে নদীর পাশ দিয়ে আলাদা সরাসরি সংযোগ করা যায় কিনা সেটাও ভাবা হচ্ছে। যদিও এটা অনেক ব্যয়বহুল হবে এবং কতটুকু টেকসই হবে সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে। যদিও এটি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর অবস্থিত। ইছাখালী, চর শরত, চর মোশাররফ, চর লক্ষ্মী ও সাধুর চরে সমুদ্র উপকূলে ৩৩ হাজার একর জমিতে এটি নির্মিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীর মহাপরিকল্পনা অনুসারে এই শিল্প নগর ৩০টি সাবজোনে বিভক্ত। প্রতিটি জোনে বৃহৎ শিল্প কারখানা তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেটি দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড়। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। তারা আশা করছে, এই মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫২০ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে দেশের আমদানিরফতানি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নগরীর পতেঙ্গাহালিশহর সাগর উপকূলজুড়ে বেটার্মিনাল গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পটির অধীনে ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটিজসহ ৫৮৩ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি, ২২০ দীর্ঘ ডলফিন জেটি, ৮৯ হাজার বর্গমিটার আরসিসি ইয়ার্ড, দুই হাজার ১২৮ বর্গমিটার কন্টেইনার শুল্ক স্টেশন, দুই হাজার ১৫০ মিটার লম্বা ৬ মিটার উচ্চ কাস্টম বন্ডেড হাউজ, দুই হাজার ৫০০ মিটার রেলওয়ে ট্র্যাক, ৪২০ মিটার ফ্লাইওভার, এক হাজার ২০০ বর্গমিটার মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ এবং পাঁচ হাজার ৫৮০ বর্গমিটারের অফিস বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে। এই টার্মিনাল থেকে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথেও যাতে কন্টেইনার পরিবহন করা যায়সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে পাওয়া লাশটি নিখোঁজ ডেন্টাল টেকনোলজিস্টের
পরবর্তী নিবন্ধ৯৫ শতাংশ নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা