রেমিটেন্সের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য প্রণোদনা বাড়ানোর পরামর্শ

| সোমবার , ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ at ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে প্রণোদনাও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তাছাড়া টেকসই রেমিটেন্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বড় পরিসরে বিদেশ যেতে আগ্রহীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উন্নত প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘সাম্প্রতিক প্রবাসী আয়-রেমিটেন্স প্রবাহ : এত টাকা আসছে কোথা থেকে?’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মত দেন। নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্‌বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। আলোচনায় অংশ নিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সরকার প্রবাসীদের দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে যে দুই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সম্প্রতি তার কারণে বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানো ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। গত ছয় মাসেই প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। প্রণোদনা আরেকটু বাড়ানো গেলে এই প্রবৃদ্ধি আরও টেকসই হবে। খবর বিডিনিউজের।
চট্টগ্রামের এই সাংসদ মনে করেন, চলমান ব্যবস্থায় প্রণোদনা দিয়ে পাঁচ থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রবৃদ্ধি টেকসই হতে পারে। কিন্তু এরপর অবশ্যই এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই প্রবাসীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলে জানান তিনি। প্রণোদনার মাধ্যমে চূড়ান্ত টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে না। এজন্য অবশ্যই প্রবাসীদের জন্য সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দক্ষতা অর্জন করার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। যে লোক যে দেশে যেতে চায় সেই দেশের
সংস্কৃতি, ভাষা এবং সংশ্লিষ্ট কাজের বিষয়ে তাকে দক্ষ করার পর পাঠাতে পারলে তার বেতন তুলনামূলক বেশি হওয়ার পাশাপাশি তার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরতে পারবেন। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।
অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রবাসীদের কল্যাণে ব্যাপকভাবে গবেষণার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এ সভাপতি প্রবাসীদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন। এর আগে মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পরপরই বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফের এক গবেষণায় বাংলাদেশের রেমিটেন্স ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যাওয়ার আশংকা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে উল্টো পরিস্থিতি দেখা গেছে। ২০১৯ সালের স্বাভাবিক সময়ে প্রবাসীরা যে রেমিটেন্স প্রেরণ করেছিল মহামারীর সময়ে সেই প্রবাহ উল্টো ৩৮ শতাংশ বেড়ে গেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স ৩০ শতাংশ এসেছে সৌদি আরব থেকে। গত বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে রেমিটেন্স প্রেরণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২৮ শতাংশ নিয়ে এবার দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। দুই শতাংশ প্রণোদনা, উৎস না দেখিয়ে দেড় হাজার ডলার বা দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত রেমিটেন্স পাঠানোর যে সুযোগ, গত জুলাই মাস থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার ডলার বা পাঁচ লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত এতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডাকডাকগোর প্রতিদিনের সার্চ দশ কোটি ছাড়িয়েছে
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ১৫১.৬৯ কোটি টাকা