রুমায় ৫ জঙ্গি আটক

কেএনএফ ও জামাতুল আনসারের সাথে গোলাগুলি, র‌্যাবের ৮ সদস্য আহত

বান্দরবান প্রতিনিধি | বুধবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমায় র‌্যাবের সাথে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়েছে। এ সময় র‌্যাবের ৮ সদস্য আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ৫ জঙ্গিকে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী রুমা উপজেলার রেমাক্রী পাংসা ইউনিয়নের দুর্গম রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ ও নব্য জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় সন্ত্রাসীরা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়ে। র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। থেমে থেমে গোলাগুলির ঘটনা চলছিল। গোলাগুলিতে র‌্যাবের ৮ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে।

র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানান, নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করে আসছে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ। ইতোমধ্যে র‌্যাবের অভিযানে পাহাড়ের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনের ৩৮ জন জঙ্গি সদস্য এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের ১৪ জন সদস্যকে যৌথ বাহিনী বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে আটক করেছে। গত মাসের ২৯ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সাথে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে নিহত ১ জন কেএনএফ সদস্যের লাশও উদ্ধার করা হয়েছে। আস্তানা থেকে পাওয়া গেছে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র। পার্বত্য চট্টগ্রামে পৃথক একটি রাষ্ট্র বানাতে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সদস্য ঘরছাড়া নিখোঁজ তরুণরা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন জানান, গত বছরের আগস্ট মাসে কুমিল্লা থেকে ৮ জন তরুণ নিখোঁজ হন। তাদের স্বজনরা থানায় জিডির সূত্র ধরে খুঁজতে গিয়ে তথ্য মিলে নিখোঁজ তরুণরা জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সদস্য হয়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু করে। অভিযানে ৩৮ জন জঙ্গি এবং পাহাড়ের সশস্ত্র গ্রুপ কেএনএফের ১৪ জন সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। চলমান অভিযানে মঙ্গলবার সকালে রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেয়া র‌্যাবের টিমের সাথে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। অভিযানে র‌্যাবের ৮ জন সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৫ জঙ্গি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জঙ্গি নির্মূলে ৮০ ভাগ সফলতা পেয়েছি। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সংখ্যাও আগের চেয়ে কমেছে। অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। শতভাগ সফলতার পথেই আমরা এগুচ্ছি। জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলমান থাকবে।

থানচিতে র‌্যাবের প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন, র‌্যাব কর্মকর্তা মশিউরসহ র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকমিটি ঘোষণার পরপর দুই সহ সভাপতির পদত্যাগ
পরবর্তী নিবন্ধখাতুনগঞ্জে চিনির বাজারে অভিযান