রাজস্ব আদায়েও ফিরছে গতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে অর্থনীতি

| বৃহস্পতিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোর সঙ্গে রাজস্ব আদায়ও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৪ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। পরের মাস আগস্টে তা বেড়ে ১৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা হয়েছে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসে তা আরও বেড়ে ২০ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে।
সব মিলিয়ে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আদায় হয়েছে ৪৯ হাজার ৯৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। গত বছরের এই তিন মাসে আদায় হয়েছিল ৪৮ হাজার ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ হিসাবে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
মহামারীকালে বড় ধাক্কা নিয়ে শুরু হয় অর্থবছর। প্রথম মাস জুলাইয়ে গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে ২২ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়। দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) মিলিয়ে অবশ্য প্রবৃদ্ধি হয়; তবে খুবই সামান্য মাত্র দশমিক শূন্য ১৬ শতাংশ।
গত বছরের মার্চে দেশে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাব শুরুর দিকে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছিল। তখন রাজস্ব আদায় প্রায় তলানিতে ঠেকেছিল। ওই সময়ে প্রায় সব কিছু বন্ধ থাকলেও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখা হয়। তবু রাজস্ব আদায় খুব বেশি হয়নি। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশের মতো রাজস্ব আদায় কমে যায়। পরের তিন মাসে অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সেই অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ তিন মাসের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি অর্থনীতি উঠে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক হচ্ছে রাজস্ব আদায়। গত তিন মাসে আগের চেয়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। এটা ভালো লক্ষণ। করোনার প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
তবে এতে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে রাজস্ব আদায়ের গতি আরও বাড়াতে এনবিআরের ব্যাপক সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, গত তিন মাসে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর মানে, অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙা হয়নি। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙা হতে আরও পাঁচ-ছয় মাস লাগতে পারে। তবে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত অর্থবছরের শেষ দিকে অর্থাৎ এপ্রিল, মে ও জুন মাসে রাজস্ব আদায় ভালো হয়। এই সময়ে আগের মাসগুলোর তুলনায় রাজস্ব আদায়ে গতি থাকে। লক্ষ্য অর্জনে বড় ভূমিকা রাখে এই সময়টি। কিন্তু করোনাভাইরাস এবার সেই ‘সোনালি সময়’টি খেয়ে ফেলেছিল। সে কারণেই গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি হয়েছিল বলে মনে করেন আহসান মনসুর। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী ধরা হয়েছিল। এবারও অবাস্তব লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংবাদ খাতের সুরক্ষায় আরও ক্ষমতা চায় মার্কিন সংস্থা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ২৮.৩৪ কোটি টাকা লেনদেন