রাজনৈতিক মানবিক মূল্যবোধ

প্রতিমা দাশ | শুক্রবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে বিভিন্ন সমপ্রদায়ের লোক নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখানে প্রতিটি মানুষ তার স্বস্ব ধর্ম যেন স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা আমাদের রাজনৈতিক দলের চিন্তা ধারায় থাকতে হবে। প্রতিটি মানুষ যেন স্বাধীনভাবে তার মতামত প্রকাশ করতে পারে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা যেন একে অন্যের ধর্মের উপর শ্রদ্ধাশীল হবেন।

 

রাজনৈতিক কারণে আমাদের মতবিরোধ থাকতেই পারে, আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ একটি সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ সমপ্রদায়িক চেতনার দেশ। আমরা যদি অসামপ্রদায়িক চেতনা লালন করি এবং মানসিকভাবে তার চর্চা করে তাহলে বাংলাদেশের সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বিকাশ সম্ভব। মনে রাখতে হবে এই দেশটা সকলের, এখানে কেউ উড়ে এসে জুড়ে বসেনি।

তাহলে কেন একজন মানুষ ধর্মের জন্য তার ভিটেমাটি ভূমিহারা হবেন। তাই মানুষের ধর্মের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করে মানুষের মধ্যে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বন্ধন দৃঢ় করা আরো জরুরি। সৃষ্টিতত্ত্বে মানুষে মানুষে কোনো পার্থক্য নেই। আকৃতি প্রকৃতির সুখ দুঃখ ক্ষুধা তৃষ্ণা আহার বিশ্রামের অনুভূতিতে সব মানুষ অভিন্ন। পৃথিবীর যেকোনো দেশের অধিবাসী হোক তার একমাত্র পরিচয় সে মানুষ।

সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই এটি সমপ্রদায়িক সমপ্রীতির মূল মন্ত্র। এই চরম সত্যকে ভুলে গিয়ে আমরা যদি কৃত্রিম জাতি ঘৃণ্য জাতিবাদ তৈরি করি তাহলে আমাদের দেশের উন্নতি কখনোই সম্ভব নয়। মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা না করে ধর্ম বর্ণ জাতি গোত্র ইত্যাদি দিয়ে পার্থক্য করে দেখায় নামে সমপ্রদায়িকতা। পৃথিবীর সকল ধর্মের মূল কথা প্রেম মৈত্রী শান্তি সমপ্রীতি।

১৯৭১ সালের এদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান বাঙালি ও অবাঙালি সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে এইদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন। সেইসময় সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানে বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ঘোষিত হয়। পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যেমনই হোক, আমরা যেন রাজনৈতিক মানবিক মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে না যায় এটাই সাধারণ জনগণের ইচ্ছা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিটাগং মিউজিক সোসাইটি’র ষষ্ঠ বছরে পদার্পণ
পরবর্তী নিবন্ধগর্ভাবস্থার চার থেকে ছয় মাস