গর্ভাবস্থার চার থেকে ছয় মাস

ডা. সোমা চৌধুরী | শুক্রবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ

গর্ভাবস্থার চার থেকে ছয় মাস এমন একটা সময় যখন প্রথম দিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো যেমন মাথা ব্যথা, সকালের বমিবমি ভাব, অরুচি এগুলো কমে যায়। তাই দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক সময়কে সবচেয়ে আরামদায়ক সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মা এবং গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতার জন্য কিছু বিষয় মেনে চলা দরকার। যেমন: ) খাদ্যাভাস: এ সময়ে সব খাবার পূর্বের চেয়ে এক মুঠো বেশি খেতে হবে। কারণ প্রথম তিন মাসের চেয়ে এখন আরো বেশি ক্যালরি প্রয়োজন।

 

আদর্শ খাবারের পিরামিড: শর্করা খাবারের মধ্যে লাল চালের ভাতই ভালো। প্রতি বেলা খাবারে প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস বা ডিম অবশ্যই থাকা প্রয়োজন। প্রচুর পানি ও পানি জাতীয় দুধ, ডাব, স্যুপ, শরবত খেতে হবে। খাবারের তালিকা (সময় অনুযায়ী) গর্ভাবস্থার এ সময়ে শিশু চোখ খুলতে পারে, আঙুল চোষে, শুনতে পায় এবং মস্তিষ্ক খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কী খাবেন না: ) কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ মাংস, মাছ, ডিম। ২) অপাস্তুরিত দুধ। ৩) অতিরিক্ত ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন কফি বা চা। ৪) অতিরিক্ত তেল, চর্বি।

) বিশ্রাম: দিনে কমপক্ষে ২ঘণ্টা এবং রাতে ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে হবে। ৩) পরিধেয় বস্ত্র: ঢিলেঢালা সুতার আরামদায়ক কাপড় পরিধান করা উচিত। ৪) ঘরোয়া হালকা কাজকর্ম এবং প্রতিদিন ২০৩০মিনিট হাঁটা নরমাল ডেলিভারির জন্য অনেক সহায়ক। ৫) ভ্রমণ: চার থেকে ছয় মাসে ভ্রমণ কিছুটা নিরাপদ। ৬) লক্ষ্যণীয় বিষয়মা শিশুর নড়াচড়া লক্ষ্য রাখবেন। ১২ ঘণ্টায় শিশু কমপক্ষে ১০ ১২ বার নড়াচড়া করা স্বাভাবিক। ৭) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওৎড়হ, ঈধষপরঁস ট্যাবলেট ও অন্যান্য ওষুধ খেতে হবে। ৮)এ সময়ে দুই ডোজ টিটি ভ্যাঙিন নিতে হবে। ৯) এনোম্যালি স্ক্যান (টঝএ)-এ সময়ে করাটা জরুরি।

সমস্যা: প্রস্রাবে সংক্রমণ, কোষ্ঠকাঠিন্য, ওজন না বাড়া, তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা ইত্যাদি। এসব সমস্যা গুলো নিকটস্থ কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করে সহজেই সমাধান করা যায়।

মাতৃত্বের মতো আনন্দের অনুভূতি উপভোগ করতে হলে পরিবারের সদস্যরা মাকে সর্বদা সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে যাতে গর্ভবতী মা নিজেকে নিরাপদ মনে করেন। মা সুস্থ থাকলেই একটি সুস্থ শিশু জন্মাতে পারে। তাই আসুন সকলে গর্ভকালীন সময়ে মায়ের প্রতি বেশি সচেতন হই এবং মাকে সুস্থ রাখি কারণ সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু।

লেখক: অবস ও গাইনী বিশেষজ্ঞ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজনৈতিক মানবিক মূল্যবোধ
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ও বর্তমান প্রেক্ষাপট