‘রহস্যময়’ বিশাল বেলেপাথরের জার মিলল আসামে

| শুক্রবার , ১ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্য আসামে বেলেপাথরের ‘রহস্যময়’ কয়েক ডজন বিশাল জার পেয়েছেন গবেষকরা, প্রাচীনকালে মানুষকে কবর দেওয়ার সময় এসব জার ব্যবহৃত হতো বলে তাদের অনুমান। আসামের চারটি স্থানে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় এই ৬৫টি বেলেপাথরের জার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। জারগুলোর আকার-আকৃতিতে ভিন্নতা আছে, এর মধ্যে কয়েকটি লম্বা, সিলিন্ডার আকৃতির, অনেক জারের অংশবিশেষ বা পুরোটাই মাটির নিচে চাপা পড়া অবস্থায় ছিল। খবর বিডিনিউজের।
পাথরের এই ধরনের পাত্র এর আগে লাওস ও ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া গিয়েছিল। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের চেষ্টায় আসামে বেলেপাথরের বিশাল এসব জার পাওয়ার বিস্তারিত চলতি সপ্তাহে এশিয়ান আর্কিওলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন নর্থ-ইস্টার্ন হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিলক ঠাকুরিয়া এবং গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তম বাঠারি। আমরা এখনও জানি না এসব বিশাল বিশাল জার কারা বানিয়েছে, তারা কোথায় বাস করতেন। এটা পুরোটাই একটা রহস্য, বলেছেন গবেষক দলের সদস্য অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নিকোলাস স্কপাল। বিশাল বিশাল এসব জার কী কাজে লাগতো তা স্পষ্ট হওয়া না গেলেও এগুলো সম্ভবত সমাধি সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা গবেষকদের।
উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগা গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে এসব জার নিয়ে কিছু গল্প প্রচলিত আছে, বলা হয় এসব জার নাকি মৃতদেহ দাহ করার পর থাকা অবশেষ, জপমালা ও অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে ভরা হতো, বলেন স্কপাল। তবে তারা যে জারগুলো পেয়েছেন, সেগুলো খালি অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ড. ঠাকুরিয়া। এককালে এগুলো হয়তো ঢাকনা দিয়ে আবৃত ছিল, বলেছেন তিনি।
তিনি জানান, তাদের প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে আরও খনন করা এবং জারের বৈশিষ্ট্যগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা। আসামে এবং পার্শ্ববর্তী মেঘালয়ে আগেও এ ধরনের বিভিন্ন স্থানের সন্ধান মিলেছিল। এখন পর্যন্ত আসামে ১০টির মতো স্থান থেকে এ ধরনের সাতশর বেশি জার মিলেছে, বলেছেন ঠাকুরিয়া। এ জারগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ অব্দেরও আগের বলে ধারণা করা হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, তারা আসামের খুবই সীমিত এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়েছিলেন। সেখানে সম্ভবত এ ধরনের আরও অনেক স্থান পাওয়া যাবে। সেগুলো খুঁজে পেতে আমাদের যত দেরি হবে, যত বেশি ফসল রোপন আর জঙ্গল কাটা হতে থাকবে, ততই সেসব স্থান ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকবে, বলেছেন স্কপাল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরুশ ক্যাপসুলে চড়ে পৃথিবীতে ফিরলেন মার্কিন মহাকাশচারী
পরবর্তী নিবন্ধমজুদ থেকে রেকর্ড তেল ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র, কমছে দাম