রবীন্দ্রনাথের বন্ধু কেদারনাথ

হারুন রশীদ | শনিবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১২:২৬ অপরাহ্ণ

১.

সেই একবারই চট্টগ্রামে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯০৭ সালের ১৭ জুন সকালে কবি যখন বটতলী স্টেশনে পা রাখেন,তখন সমগ্র চট্টগ্রাম ভেসে যাচ্ছিল প্রবল বৃষ্টিতে। কবিকে এক ঝলক দেখার জন্য প্রবল ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে উপস্থিত হয়েছিলেন শহরের সাহিত্যপ্রাণ মানুষেরা। রঙ বেরঙের লতাপাতা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল সমগ্র প্ল্যাটফর্ম। তিনি সেদিন এক ঘরোয়া সাহিত্য সভায় যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক রজনীরঞ্জন সেনের বাড়িতে। সভা শেষে রাত্রিযাপন করেছিলেন কমলাকান্ত সেনের বাড়িতে। পরদিন সকালে তিনি ফিরিঙ্গীবাজারে জাহাজঘাটায় বেড়াতে যান। বিকেলে কমলবাবুর থিয়েটার হলে (পরবর্তী লায়ন সিনেমা) সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন। সেদিন রাতের ট্রেনেই কবি কলকাতা ফিরে গিয়েছিলেন।

সেই ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম সফরে রবীন্দ্রনাথের সাথে এসেছিলেন তাঁর এক বিশেষ বন্ধু। নাম কেদারনাথ দাশগুপ্ত। এ-যুগের মানুষের কাছে কেদারনাথ একটি অচেনা নাম হলেও শতবর্ষ আগে তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কেদারনাথ দাশ গুপ্তের জন্ম ১৮৭৮ সালে পটিয়ার ভাটিখাইন গ্রামে। পিতা হরচন্দ্র দাশগুপ্ত চট্টগ্রামের আদালতে সরকারি মুন্সেফ ছিলেন। ১৮৯৩ সালে তিনি এন্ট্রান্স পাশ করেন মিউনিসিপ্যালিটি স্কুল থেকে। তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতা চলে যান। কলকাতা অবস্থানকালে কেদারনাথের সাথে রবীন্দ্রনাথ ও ঠাকুরবাড়ির গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই সম্পর্কটি তাঁর ভবিষ্যতকে বেশ ভালোভাবে প্রভাবিত করেছিল। তিনি সাহিত্য সংস্কৃতির জগতের সাথে নিজেকে এমনভাবে একাত্ম করে ফেলেন যে ভারতবর্ষ ছেড়ে ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমানোর পরও সেটা থেকে বিযুক্ত হননি। ভারতীয় সাহিত্য এবং নাটককে ইউরোপ আমেরিকার সুধীজনের কাছে পরিচিত করানোর কাজে বেশ বড় ভূমিকা রেখেছিলেন কেদারনাথ। রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু নাটক তিনি ইংরেজিতে অনুবাদ করে মঞ্চস্থ করেন লন্ডন ও নিউইয়র্কের খ্যাতনামা থিয়েটারে। সেই আলোচনায় যাবার আগে তাঁর জীবনের কলকাতা পর্বে চোখ বুলানো যাক।

২.
রবীন্দ্রনাথের চট্টগ্রাম সফরের দু’বছর আগের কথা। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের প্রতিক্রিয়ায় সমগ্র বঙ্গদেশ উত্তপ্ত। রবীন্দ্রনাথের মতো শান্তিপ্রিয় কবিসাহিত্যিকদেরও স্পর্শ করেছিল সেই উত্তেজনা। সেই উত্তাল সময়েই তিনি একের পর এক স্বদেশী কবিতা গান লিখে যাচ্ছিলেন। লিখেছিলেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি’। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতেও স্বদেশী হাওয়া লেগেছিল। রবীন্দ্রনাথের দিদি স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যা সরলা দেবী স্বদেশী জিনিসপত্র বিক্রির জন্য ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’ নামে একটি দোকান খুলেছিলেন। প্রধানত মেয়েদের সাহায্যের জন্য দোকানটি খোলা হলেও এর মূলে ছিল স্বদেশী চেতনা।

ঠাকুরবাড়ির সাথে তখন তরুণ কেদারনাথের সম্পর্ক গভীর। লক্ষীর ভাণ্ডারের আদর্শে প্রভাবিত হয়ে তিনি একটি স্বদেশি পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পত্রিকার নাম ‘ভাণ্ডার’। কেদারনাথের অনুরোধে পত্রিকাটি সম্পাদনার দায়িত্ব নেন রবীন্দ্রনাথ। সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন প্রমথ চৌধুরী। সেই পত্রিকাতেই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ‘একা’ শিরোনামের সেই বিখ্যাত গান – ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’।

ভারতীয় রাজনীতি কিংবা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথের প্রকাশ্য কোন অংশগ্রহণ দেখা না গেলেও এই পত্রিকায় তিনি বেশ রাজনীতি সচেতন ছিলেন। তাঁর অধিকাংশ স্বদেশী এবং বাউল ঘরানার কবিতা এই পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়েছিল।

ভাণ্ডার সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছিলেন:

আমি এই কাগজ-সম্পাদনের কাজে ধরা দিলাম কেন একথা যদি কেহ জিজ্ঞাসা করেন,তবে আমার জবাব এই যে, ব্যাধের বাঁশি শুনিয়া হরিণ যে কারণে ধরা দেয়, আমারও সেই একই কারণ। অর্থাৎ তাহা কৌতুহল, আর কিছুই নহে। আমি অনেক সম্পাদকি করিয়াছি, আমাকে এ কথা কবুল করিতে হইবে যে আমাদের দেশে বড় বড় কাগজে বড় বড় প্রবন্ধ অধিকাংশই বানাইয়া তোলা। সে সকল লেখার তাগিদ অন্তরের মধ্যে নাই

(বৈশাখ, ১৩১২ বঙ্গাব্দ ‘ভাণ্ডার’)

কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভাণ্ডার পত্রিকার স্বদেশী বিপ্লব খুব বেশিদূর যেতে পারলো না। বছরখানেকের মধ্যেই পত্রিকার ওপর বৃটিশ পুলিশের সুনজর পড়ে। এই পত্রিকা স্বদেশী চেতনা জাগিয়ে বৃটিশ-বিরোধী মনোভাব তৈরি করছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। সুতরাং পত্রিকার সাথে জড়িত সবার ওপর নজরদারী শুরু হলো। রবীন্দ্রনাথ এসবে গা না করলেও কেদারনাথের পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল। কেদারনাথকে চাপ দেয়া হলো পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে তিনি যেন বিলেতে চলে যান। কেদারনাথ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথও সম্পাদকের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। রবীন্দ্রনাথের পদত্যাগের পেছনে পুলিশের নজরদারীর কোন ভূমিকা ছিল কিনা জানা যায় না।

কেদারনাথ অবশ্য তখনই পত্রিকা বন্ধ করে দেননি। আরো ছ’মাস কোনমতে চলেছিল পত্রিকাটি। পত্রিকা বন্ধ হবার কিছুদিন পর চট্টগ্রামের নিমন্ত্রণ এলো রবীন্দ্রনাথের কাছে। কেদারনাথের কাছে খবর পাঠানো হলো সফরসঙ্গী হবার জন্য। রবীন্দ্রনাথকে নিজের শহরে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে তখনই রাজী হয়ে গেলেন তিনি। গুছিয়ে ট্রেনে উঠে পড়লেন যথাসময়ে।

পরিবারের তাগিদে কেদারনাথ ১৯০৮ সালে ব্যারিষ্টারী পড়ার জন্য বিলেতে চলে যান। কিন্তু সেখানেই সব শেষ নয়। কেদারনাথের আসল কাজ শুরু হয়েছিল লন্ডন যাবার পর থেকেই।

৩.
আইন পড়ার জন্য লন্ডনের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান লিংকনস ইনে ভর্তি হলেও পরীক্ষার ফলাফল তেমন ভালো হয়নি। ওদিকে সাহিত্য সংস্কৃতির জগত তাঁকে ডাকতে শুরু করেছিল আবারও। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি এবার নাট্য জগতে যুক্ত করেন নিজেকে। এডউইন আর্নল্ডের লেখা ‘লাইট অব এশিয়া’ নামের বুদ্ধের জীবনীভিত্তিক একটা নাটক তৈরি করে তিনি বেশ সাড়া জাগাতে সক্ষম হন। এই সাফল্যের পর উৎসাহিত হয়ে ‘ইন্ডিয়ান আর্ট এণ্ড ড্রামাটিক সোসাইটি’ নামের একটা সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি। ভারতীয় সাহিত্য এবং নাট্যকলাকে পাশ্চাত্য জগতের সাথে পরিচয় করানো যার উদ্দেশ্য ছিল। ওই সংগঠনটি পরবর্তীকালে নাম বদলে ‘ইউনিয়ন অব ইস্ট এন্ড ওয়েস্ট’ নামে পরিচিত হয়।

১৯১০ সালে লন্ডনে রবীন্দ্রভক্ত রোদেনস্টাইনের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল ‘ইন্ডিয়া সোসাইটি’। গীতাঞ্জলির যে ইংরেজি অনুবাদ নোবেল পুরস্কারে ভূমিকা রেখেছিল, সেটা ইন্ডিয়া সোসাইটি থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।

রোদেনস্টাইন এবং ইন্ডিয়া সোসাইটির সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল কেদারনাথের। কেদারনাথ তখন জনপ্রিয় ভারতীয় নাটকগুলোকে লন্ডনের থিয়েটার হলে প্রদর্শন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কালিদাসের শকুন্তলা, রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর ইত্যাদি নাটক ইংরেজিতে অনুবাদ করে মঞ্চস্থ করে সাড়া জাগিয়ে ফেলেন তিনি। শকুন্তলার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সিবিল থর্নডাইকের মতো বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী। লন্ডনের আলবার্ট হল থিয়েটারে কেদারনাথের পরিচালনায় কালিদাসের ‘শকুন্তলা’ নাটকটি এত দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল যে সেটা একাধিকবার মঞ্চস্থ করতে হয়েছিল। সে-ব্যাপারে রোদেনস্টাইন রবীন্দ্রনাথের কাছে কেদারনাথের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে চিঠি লিখেছিলেন।

কেদারনাথ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আহত সৈন্যদের মনোরঞ্জনের জন্য রবীন্দ্রনাথের নাটক পরিবেশন করেও সুনাম অর্জন করেছিলেন। এছাড়া ১৯১৩ সালে লন্ডনে মহাত্মা গান্ধীর উদ্যোগে গঠিত Indian Ambulance Crops-এ যোগ দিয়েছিলেন।

কোনো সন্দেহ নেই কেদারনাথ লন্ডনের সুধীসমাজের মধ্যে ভারতীয় সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়ে আগ্রহ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ নোবেল পাওয়ার পর সেটা আরো জোরদার হয়েছিল। ১৯১২ থেকে ১৯২০ পর্যন্ত সময়কালে লন্ডনে তাঁর পরিচালনায় অন্তত ১২টি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল। বিলেতের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তিনি একটা ভালো জায়গা করে নিয়েছেন। তবু একদিন হঠাৎ করে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। এবং সেই সিদ্ধান্তের পেছনেও ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।

৪.
১৯২০ সালে রবীন্দ্রনাথ লন্ডন সফরে গেলে দ’ুজনের মধ্যে নানান বিষয়ে আলাপ হয়। তখন তিনি কেদারনাথকে তাঁর পরবর্তী গন্তব্য আমেরিকার সফরসঙ্গী হবার প্রস্তাব দেন। সেই ঘটনা নিয়ে কেদারনাথ বলেছিলেন- ‘১৯২০ সালে আমার সাথে রবীন্দ্রনাথের দেখা হয়েছিল লন্ডনে। তিনি বলছিলেন আমেরিকা খুব চমৎকার একটি দেশ। তাঁর সাথে সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি আমাকে জোর অনুরোধ করলেন। আমি দেরি না করে টাকাপয়সা যোগাড়যন্ত্র করে তাঁর সাথে রওনা দিলাম।’
নিউইয়র্ক পৌঁছে রবীন্দ্রনাথ ব্রুকলিন একাডেমি অব মিউজিকসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাষণ দিয়েছিলেন। পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহবান ছিল সেসব বক্তৃতায়। যা কেদারনাথের ইউনিয়ন অব ইস্ট এন্ড ওয়েস্টের প্রধান মন্ত্র। ১৯২০ সালের নিউইয়র্ক টাইমসের সূত্রে জানা যাচ্ছে গ্যারিক থিয়েটারে তিনি ‘বিদায় অভিশাপ’ নাটকটি মঞ্চস্থ করেন। ১৯২১ সালের ১০ এপ্রিল নিউইয়র্ক হেরাল্ড পত্রিকার সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে তিনি ‘ইউনিয়ন অব ইস্ট এন্ড ওয়েস্ট’ এর সৌজন্যে তিনটি নাটক মঞ্চস্থ করেন যেখানে অভিনয় করেছেন মিস ব্ল্যাংক হেইস, ডরোথি রুবিনস্টেইন এবং লিলিয়ান বুচ ইত্যাদি সুপরিচিত অভিনেত্রী। কেদারনাথ নিজেই নাটকগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করে পরিচালনা করেছিলেন।

১৯২৪ সাল থেকে নাটক সাহিত্যের বাইরে বিস্তৃত হয় কেদারনাথের কর্মজগত। সেই সময় নিউজার্সির এক বিশিষ্ট সমাজকর্মী চার্লস ফ্রেডেরিক ওয়েলারের সাথে পরিচয় ঘটে যিনি ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে মানবজাতির মধ্যে একটা ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন। থ্রিফোল্ড মুভমেন্ট নামে পরিচিত সেই উদ্যোগের সাথে জড়িত হয়েছিলেন অ্যানি বেসান্ত এবং স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের মতো বিশ্বখ্যাত মানুষেরা। আরো ছিলেন বরোদা এবং বর্ধমানের মহারাজাও। তিন মহাদেশের নয়টি দেশের চোদ্দটি শহরে বিস্তৃত হয়েছিল তাঁদের সেই উদ্যোগটি।

১৯৩৩ সালে ওয়েলার এবং কেদারনাথের উদ্যোগে World Congress of Faiths(WCF) নামে আন্তঃধর্মীয় সহযোগিতা বিষয়ক একটা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল শিকাগো এবং নিউইয়র্ক শহরে। বিভিন্ন ধর্মের বিশ্বাসীদের মধ্যে ঘনিষ্টতা বাড়িয়ে তুলে মানবতাকে সবার উপরে স্থান দেয়াই ছিল সম্মেলনের উদ্দেশ্য। ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল সেই অভিনব সম্মেলনটি। সারা বিশ্ব থেকে অন্তত দশ হাজার মানুষ তাতে যোগ দিয়েছিল।

WCF এর দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল লন্ডনে ১৯৩৬ সালে। এই সম্মেলনে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিগণ যুক্ত হয়েছিলেন। হিন্দুধর্মের পক্ষ থেকে এসেছিলেন ড. রাধাকৃষ্ণন, প্রফেসর মহেন্দরনাথ সরকার, ইসলাম ধর্মের পক্ষ থেকে এসেছিলেন স্যার আবদুল কাদির, সালিম ইউসুফ আলী বৌদ্ধ ধর্মের পক্ষ থেকে এসেছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রফেসর মালাশেখর, প্রফেসর নিকোলাস বারডিয়েফ এসেছিলেন ক্রিস্টানদের পক্ষে, ড. সুজুকি এসেছিলেন জেন বৌদ্ধ ধর্মের পক্ষ থেকে। দ্বিতীয় সম্মেলনটির আয়োজক ছিলেন ১৯০৩ সালে তিব্বত অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্নেল ফ্রান্সিস ইয়াংহাজবেন্ড।

তাঁর আন্তঃধর্মীয় সহযোগিতা বিষয়ক চিন্তাধারাগুলোকে একত্রিত করে ১৯৪১ সালে আমেরিকা থেকে প্রকাশ করেছিলেন ঊংংবহপব ড়ভ জবষরমরড়হং নামের তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থটি। এই গ্রন্থ এখনো আমাজনে বিক্রি হয়।

১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে কেদারনাথ দাশগুপ্ত আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন নিউইয়র্কে। তারপর থেকে নানা ঘটনাপ্রবাহে তিনি বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যান। তাঁর মৃত্যুর পর নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় লেখা হয়েছিল- A new Yorker whose cultural and interfaith activities were known on both sides of the Atlantic. An early force in the Hindu renaissance, he was directly linked to Indian leaders such as Gandhi and Rabindranath Tagore.

পূর্ববর্তী নিবন্ধমফিজনের দুর্বহ বেদনা
পরবর্তী নিবন্ধআধঘণ্টা আগেই গেট বন্ধ মেট্রোস্টেশনের