যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক প্রয়োজন

নুসরাত সুলতানা | বৃহস্পতিবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

দেশের প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাক্রমে বড় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ‘নতুন শিক্ষাক্রম ২০২২ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে- এমন কথাই ব্যক্ত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি’। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় এটি।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পাল্টে যাবে শিক্ষাক্রম। বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এই শিক্ষাক্রম করা হচ্ছে- এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আমরা সাধারণভাবে এটা বুঝি, এতো বড় ধরনের একটা পরিবর্তনে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে আমাদের সন্তানদের। সবার স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা না থাকলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। বিষয় ও পরীক্ষা কমবে। বইও হবে পরিবর্তিত। দশম শ্রেণীর আগে কোন পাবলিক পরীক্ষা হবে না। বিভাগ নির্ধারণ হবে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে। সপ্তাহে স্কুল দুদিন ছুটি থাকবে এবং জাতীয় দিবসগুলোতে স্কুল খোলা থাকবে। শিক্ষার্থীদেরকে জাতীয় দিবসে অবশ্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে হবে এবং দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জনের উপর জোর দেয়া হবে। পরীক্ষার উপর বেশি জোর না দিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। এই ধারাবাহিক মূল্যায়নের জন্য সবচেয়ে প্রথম এবং প্রধান কাজ হবে যোগ্য শিক্ষক গড়ে তোলা।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিকে শিশুদের জন্য আলাদা বই থাকবে না। সেখানে শিক্ষকেরা শেখাবেন। তৃতীয় শ্রেণীর আগে স্কুলে কোনো পরীক্ষা হবে না। পরবর্তী ক্লাস গুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। কিছুটা শিখনকালীন মূল্যায়ন আর কিছু সামষ্টিক মূল্যায়ন। দশম শ্রেণীর দশটি বিষয়ের মধ্যে পাবলিক পরীক্ষা হবে পাঁচটি বিষয়ে। বাকি পাঁচটি বিষয়ের হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূল্যায়ন। বর্তমানে এক মাসেরও বেশি সময় লাগে এসএসসি পরীক্ষা শেষ করতে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫ দিনে পরীক্ষা শেষ হবে।
দশম শ্রেণী পর্যন্ত অভিন্ন বিষয়ে পড়ানোর সিদ্ধান্ত এবং বিদ্যমান শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত সঠিক। তবে এই যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক। যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক যদি তৈরি করা না যায় তাহলে এই শিক্ষাক্রম কোন উপকারে আসবে না। আর প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমে শিক্ষানীতির অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এটা অবশ্যই ভালো একটি বিষয়। তবে সমস্যা হলো বাস্তবায়ন নিয়ে। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য যে শিক্ষা আইন দরকার, বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটি এখনো হয়নি। তাই নতুন শিক্ষাক্রম কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সেটাই এখন প্রশ্ন সাপেক্ষ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানায় না
পরবর্তী নিবন্ধনতুন যুগের মার্কেটিং