কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “যারা নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করবে তাদের কঠিন মাশুল দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খল দল। এখানে বিশৃঙ্খলাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। আগামী ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন বিষয়ে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে সু-নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রের বরাবরে প্রার্থী তালিকা প্রেরণ করবে। তবে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাকর্মীদের মনোনয়ন প্রদান করতে হবে। যারা বিগত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নির্বাচন করেছিলেন তাদের মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। ইত:পূর্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদেরও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।”
তিনি আজ সোমবার (১ মার্চ) বিকালে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিএনপি-জামাত আওয়ামী লীগের চিহ্নিত শত্রু। তাদের বিষয়ে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। তাদের সাথে সখ্যতা করা যাবে না।”
তৃণমূলের কর্মীরাই দলের প্রাণ উল্লেখ করে মাহবুবুল আলম হানিফ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক রাখার জন্য এবং তাদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য দলীয় এমপিদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মী সভায় তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা এক যুগ ধরে দেশ সেবা করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বে একদিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে। বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে কিন্তু আওয়ামী লীগের সুসময়ে বিএনপি-জামাতের ঘাপটি মেরে থাকা সুযোগ সন্ধানীরা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে দলের ও নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।”
তিনি সহযোগী সংগঠনের উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিতে নেতা নির্বাচনের সময় তাদের পারিবারিক তথ্য যাচাই করার নির্দেশ প্রদান করেন।
মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের কোনোভাবেই দলে আশ্রয় না দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
তিনি বলেন, “যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে আওয়ামী লীগে তাদের দরকার নেই।”
তিনি যে সমস্ত উপজেলায় সংগঠনের সাংগঠনিক সমস্যা রয়েছে সেই সমস্ত উপজেলার বিষয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সভা আহ্বান করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য জেলা আওয়ামী লীগকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে যেন কোনো প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।”
তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রনজিত দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় আরো বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবু তালেব, নজিবুল ইসলাম, অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, শামশুল আলম মণ্ডল, জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, নুরুল বশর, জহিরুল ইসলাম সিকদার, সোহেল আহমদ বাহাদুর, এস এম সাদ্দাম হোসেন।