একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখার পরও মিলছিল না গোল। এর মাঝে পেনাল্টি মিস করে বসেন লিওনেল মেসি। সেই হতাশা নিয়ে অবশ্য পড়ে থাকেনি আর্জেন্টিনা। আক্ষেপ ঝেড়ে ফেলে পোল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয়ই তুলে নিয়েছে তারা। মেসি মনে করেন তার ওই ভুলের পর আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে দল। শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিতে পোলিশদের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল আর্জেন্টিনার জন্য সামান্যই। এমন ম্যাচে দারুণ ফুটবল উপহার দেয় দলটি। চেপে ধরে প্রতিপক্ষকে। লাতিন আমেরিকার চ্যাম্পিয়নদের একের পর এক আক্রমণে পুরো ম্যাচেই ঘর সামলাতে ব্যস্ত থাকতে হয় পোল্যান্ডকে। চমৎকার পারফরম্যান্সের পরও গোলের দেখা পাচ্ছিল না আর্জেন্টিনা। কাজে লাগাতে পারছিল না তারা সুযোগগুলো। সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন অধিনায়ক মেসি নিজেই। তাদের আক্রমণ রুখতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত তার মুখেই আঘাত করে বসেন পোল্যান্ডের গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যাসনি। ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
৩৯ মিনিটে মেসির ওই স্পট কিক দারুণ দক্ষতায় থামিয়ে দেন ওজসিচ শেজনি। অসাধারণ খেলেও প্রথমার্ধে গোল না পাওয়ার হতাশ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে। তবে এতে ভেঙে পড়েনি দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে কাঙ্খিত গোল এনে দেন আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হুলিয়ান আলভারেস। ২–০ গোলের জয়ে ১৪ আসরের মধ্যে ১৩ বার নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচ শেষে মেসি বললেন, তার পেনাল্টি মিসই দলকে আরও উজ্জীবিত করে তুলেছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে বাড়িয়ে দিয়েছিল জয়ের তাড়না। আমার ওই ভুলের পর দল শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আমরা জানতাম যে, একবার প্রথম গোলটি হয়ে গেলে খেলা বদলে যাবে। তবে সৌদি আরব এবং মেক্সিকোর ম্যাচটি আমাদের মানসিক প্রশান্তি দিয়েছে। যদিও জিততে হবে ভেবে মাঠে নেমেছিলাম আমরা। সৌদি আরবের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা আর্জেন্টিনা পরের দুই ম্যাচ জিতে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। শেষ ষোলোয় তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ‘ডি’ গ্রুপের রানার্স আপ অস্ট্রেলিয়াকে। দুই দলের শক্তি–সামর্থ্যেও পার্থক্য অনেক। যার প্রমাণ মেলে পরিসংখ্যানেও। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ৭ বারের দেখায় ৫ ম্যাচই জিতেছে আর্জেন্টিনা। একটি ম্যাচ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। সেটা দুই দলের প্রথম দেখায় ১৯৮৮ সালে। আরেকটি ড্র। আর্জেন্টিনাকে এরই মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা শুরু করেছেন অনেকেই। তবে মেসি মোটেও অস্ট্রেলিয়াকে সহজ দল হিসেবে নিচ্ছেন না। তার চোখে যেকোনো প্রতিপক্ষই সমান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি খুবই কঠিন হবে। যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে। সবকিছুই সমান। আমরা সবসময় যেভাবে করি সেভাবে ম্যাচটির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের শান্ত থাকতে হবে এবং একটি ম্যাচ ধরে এগোতে হবে। এখন বিশ্বকাপের আরেকটি ধাপের শুরু।
আশা করি, আজ যেভাবে খেলেছি সেটা ধরে রাখতে পারব। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগামী শনিবার মাঠের লড়াইয়ে নামবে আর্জেন্টিনা। আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু ম্যাচটি।