মোহাম্মদ নূরুল আলম স্মরণে

রশীদ এনাম | রবিবার , ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ

কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন, ‘আমরা জানি একদিন মরে যাব এই জন্যে পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না’। শেখ সাদি বলেছিলেন, এমনভাবে জীবনযাপন করো যেন কখনো মরতে হবে না, আবার এমনভাবে মরে যাও যেন কখনো বেঁচেই ছিলে না’। উক্তিগুলো আমার খুব প্রিয়। সত্যি মানুষে জীবনটা এমন হওয়া উচিত, যেন কখনো মরতে না হয়। মানুষ তাঁর সৎকর্মের মধ্যে বেঁচে থাকেন। মরে গেলেও যেন মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকেন। সবাই যেন বলে আহা, তিনি একজন মহৎ ও পরোপকারী মানুষ ছিলেন।

আমার কাছে মনে হয়, মৃত্যু মাত্রই আমরা জন্মি সমুদ্রের পানে উড়ে যাওয়া পরিযায়ী পাখির মতো, এই এলো বুঝি এই চলে গেল। মাঝখানে ডানা মেলে উড়ে যাওয়া ক্ষণিক সময়টুকু। সময়ের সমুদ্রের মাঝে আমাদের বসবাস অথচ জীবনটা যে সমুদ্রের ঢেউয়ের জলরাশির মতো, শরতের ঝরে পড়া শিউলি ফুলের মতো আমরা অনুভব করতে পারি না। কবি বোধহয় এজন্য বলেছিলেন, ‘যে জীবন ফড়িংয়ের দোয়েলের মানুষের সাথে তায় হয় নাকো দেখা’।

মানুষের মৃত্যু হয় কিন্তু স্মৃতির মৃত্যু হয় না। তা ফিরে আসে বারবার মনকে নাড়া দিয়ে যায়, বাবার চাচাত ভাই যাকে আমি মেজ কাকু বলে ডাকতাম। মোহাম্মদ নূরুল আলম, ১৯৫২ সালে ১১ জানুয়ারি ৪নং ওয়ার্ড এ লাল মিয়া গান্ধির বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। পেশায় ছিলেন একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার, পরবর্তীতে বিভিন্ন কোম্পানীতে ব্যবস্থাপক হিসেবে নিরলসভাবে সুনামের সাথে কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। পটিয়া ক্লাবের জীবন সদস্য থাকাকালীন দেখতাম খুব প্রাণন্ত মেধাবী মানুষটি, মঞ্চ নাটকে নেপথ্য কণ্ঠ দিতেন। বেশ আমোদে প্রকৃতির বাড়িতে সবাইকে নিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন করতেন।

বিশ্বকাপের খেলায় একসাথে উপভোগ করতাম। চাচার সাথে কতো সিনেমা নাটক একসাথে বসে উপভোগ করেছি হিসেব নেই। আপন ছেলের মতো আমাকে জানতেন। মেজ কাকু খুব ক্রিড়ামোদি ছিলেন। গল্পের বই পড়তেন। অনেকটা বই পোকা ছিলেন। বই পড়ার জন্য অনুপ্রেরণা দিতেন। তিনি পটিয়া ক্লাবের মোস্তাফিজুর রহমান পাঠাগারের সদস্য ছিলেন। শহীদ ছবুর অগ্রপথিক সংঘেরও একজন কর্মী ছিলেন। গত ৮ জানুয়ারী ২০২৩ মেজ কাকু আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। আল্লাহ আপনাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিঝুমদ্বীপে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সেবা নিশ্চিত করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধদুঃসময়ে পরিবারের পাশে থাকুন