মোহাম্মদ নাসির : যাঁর কণ্ঠে চাটগাঁইয়া গানের প্রথম বিশ্বায়ন

| বৃহস্পতিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ নাসির। গীতিকার, সুরকার ও লোকসঙ্গীতশিল্পী। তিনি চট্টগ্রামের মরমি ও আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তী শিল্পী। কলকতার এইচএমভি থেকে জগন্ময় মিত্রের তত্ত্বাবধানে ১৯৩২ সালে মোহাম্মদ নাসিরের মাইজভাণ্ডারী ও আঞ্চলিক গানের রেকর্ড বের হয়। মোহাম্মদ নাসির ১৯০২ সালে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার সরাইপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবদুল হামিদ এবং মাতার নাম মাহতাবজান। গানের প্রতি নাসিরের ঝোঁক ছিল শৈশব থেকেই।

যেখানেই গানের আসরের খবর পেতেন সেখানেই ছুটে যেতেন তিনি। গানের এতোটা পাগল ছিলেন যে লেখাপড়ার প্রতি ছিলো বেশ উদাসীন। তাই লেখাপড়ায় এগুতে পারেন নি বেশিদূর। লোকমান খাঁ সেরওয়ানি তাকে গান শেখার জন্য ওস্তাদ সালামত আলী দেওয়ানের কাছে নিয়ে যান। তবে তার আগেই নাসির উপমহাদেশের খ্যাতিমান সংগীতসাধক ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খরুর সান্নিধ্যে আসেন। তবে সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি আর্য্য সংগীতের ওস্তাদ সুরেন্দ্র লাল দাশের হাতে।

তিনি চট্টগ্রামের গানকে নিয়ে গেছেন উপমহাদেশীয় গণ্ডিতে। মোহাম্মদ নাসিরের কণ্ঠেই সর্বপ্রথম চাটগাঁইয়া গানের বিশ্বায়ন হয়। তার কণ্ঠেই প্রথম হিন্দুস্থান রেকর্ড থেকে চট্টগ্রামের গানের রেকর্ড বের হয়েছে। ১৯৩২ সালে জগন্ময় মিত্রের তত্ত্বাবধানে কলকাতার বিখ্যাত হিজ মাস্টার্স ভয়েজ (এইচএমভি) থেকে তার গ্রামোফোন রেকর্ড বের হয়েছিল। রেকর্ডকৃত গান দুটিই মাইজভাণ্ডারী গান, বাঁশী বাজে হৃদমন্দিরে কে বাঁশি ফুঁকে ও দয়াল ভাণ্ডারী তোরে চিনব কেমনে।

দুই বছর পর এখান থেকেই তার কণ্ঠে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড প্রকাশিত হয়। আহমেদুল হক সিদ্দিকীর রচিত এবং মোহাম্মদ নাসিরের সুরে রেকর্ডকৃত গানটি হল চাঁন মুখে মধুর হাসি/দেবাইল্যা বানাইল মোরে সাম্পানর মাঝি, কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধারে সাম্পানওয়ালার ঘর। তাঁর আরো জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘কে বাঁশি ফুকে’, ‘মন পাখিরে বুঝাইলে সে বোঝে না’। ১৯৭৯ সালের ২৮ এপ্রিল তিনি চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধঈদে বাড়ি ফেরা হোক নিরাপদে