মেধার যেন অপমৃত্যু না হয়

রূপম চক্রবর্ত্তী | সোমবার , ১০ জানুয়ারি, ২০২২ at ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

আমাদের চারপাশে অসংখ্য মেধাবী ব্যাক্তি আছেন। কেউ সমাজে মেধার স্মৃতি রেখে গেছেন আবার কেউ রাখতে পারেননি। মেধা হারিয়ে গেলে মেধাবীর ক্ষতি হয় না বরং চরম ক্ষতির স্বীকার হয় সমগ্র পৃথিবীর। সমাজের পরবর্তী বংশধরেরা এগিয়ে যাওয়া হতে যোজন যোজন পিছিয়ে থাকতে বাধ্য হয়। মেধার অপমৃত্যু রোধ করা এই সমাজে সচেতন মানুষের অন্যতম কাজ হওয়া উচিত। মোবাইল আর চ্যাটিং এ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকাটাই জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হতে পারেনা। এসব সমস্যা থেকে তরুণদের রক্ষা করতে হবে। আর রক্ষা করতে হলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। মাদকদ্রব্য, পর্ণোগ্রাফি, বেকারত্ব, অস্ত্রবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ। আবার অন্যদিকে এক শ্রেণীর যুব সমাজকে কৌশলে ধর্মের অপব্যাখ্যার দ্বারা বিপথগামী করানো হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড সংগঠিত হচ্ছে রাজনৈতিক এবং গোষ্ঠী বা ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের তাগিদেই।
হত্যা, ধর্ষণ, আত্মহননের মিছিলে বেরিয়ে পড়ছে সমাজের টগবগে তরুণ। নৈতিকতার বিপর্যয় এবং অধঃপতনের ভয়ানক চিত্র মাঝে মাঝে যখন চোখের সামনে ভেসে উঠে তখন নিজেকে খুব লজ্জিত মনে হয়। জাতি ও সমাজের উজ্জ্বল নক্ষত্র আজকের যুব বা তরুণসমাজ। কিন্তু তাদের একটি অংশ যেভাবে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে, এই নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। এর কুপ্রভাবে যেভাবে আমাদের তারুণ্য শক্তি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ইতিহাস ঐতিহ্য আর ক্রমবর্ধমান সভ্যতার ক্রমবিকাশের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে মানুষ তার আপন সত্তার কথা ভুলে গিয়ে জড়িয়ে পড়ছে নানান অপকর্মে। এই অপকর্মগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি। সেই সঙ্গে ধর্মীয় অনুশাসনের অনুশীলন, পরমত সহিষ্ণুতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করা উচিত।
যুব সম্প্রদায়কে সব রকমের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। অন্যায়ের কাছে আমরা নিজেদের মেধাশক্তিকে নষ্ট করলে হবে না। আসুন আমরা সকলে মিলে বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া কিংবা সুবিধাহীন এসব মেধার উপযুক্ত যত্নের মাধ্যমে সুন্দর একটি পরিবেশ সৃষ্টি করি। একজন প্রকৃত মেধাবী দেশের জন্য অনেক কাজ করতে পারেন। তাই মেধার যেন অপমৃত্যু না হয় তার দিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে। লেখক : প্রাবন্ধিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমার যত বিশুদ্ধ ভাবনা
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নতুন দেশ গড়ার প্রেরণা