১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে সবচাইতে বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছিল কেনিয়া। এবার আরো বড় অঘটনের জন্ম দিল আয়ারল্যান্ড। কারণ তাদের কাছে হেরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বের আগেই বিশ্বকাপকে বিদায় বলে দিতে হলো দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। চূড়ান্ত পর্বে যেতে হলে দুই দলেরই জয়ের বিকল্প ছিল না। এমন সমীকরণের ম্যাচে ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ নাগালে রাখতে বড় অবদান রাখলেন গ্যারেথ ডেলানি। পরে টপ অর্ডার তিন ব্যাটসম্যানের নৈপুণ্যে ক্যারিবিয়ানদের উড়িয়ে দিয়ে সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিল আইরিশরা। হোবার্টে উজ্জীবিত ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরে ৯ উইকেটের জয় তুলে নেয় আইরিশরা। দলের জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া ডেলানি জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এই অঘটনের ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছাড়াই হবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারা আয়ারল্যান্ড টানা দুই জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিল। স্কটল্যান্ডের পর এবার আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে হেরে প্রথমবার প্রাথমিক পর্ব খেলা ক্যারিবিয়ানদের বিশ্ব মঞ্চে পথচলা শেষ হয়ে গেল।
প্রথমে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ছিল একেবারে বাজে। তৃতীয় ওভারেই কাইল মেয়ার্সকে হারায় তারা। ব্যারি ম্যাককার্থির বলে মিড-অফে ধরা পড়েন তিনি। কার্টিস ক্যাম্পারকে টানা দুই চার ও এক ছক্কায় পাল্টা আক্রমণ চালান জনসন চার্লস। পরের ওভারেই সিমি সিংয়ের শিকার হন তিনি। ২৭ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন কিং ও লুইস। একাদশ ওভারে তাদের ৩৯ বলে ৪৪ রানের জুটি ভাঙেন ডেলানি। দলকে টানতে পারেননি পুরান, পাওয়েলও। লেগ স্পিনার ডেলানির বলে পুরান ক্যাচ দেন ডিপ কাভারে। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে নিজের মতো খেলে যান কিং। ৬ চারের সাহায্যে ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন পাওয়েল। শেষ পর্যন্ত ৬২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
শেষ দিকে ক্যারিবিয়ানদের দ্রুত কিছু রান এনে দেন ওডিন স্মিথ। ১২ বলে করেন অপরাজিত ১৯ রান। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৬ রানে। ডেলানি ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ভয়ংকর তিন ব্যাটসম্যান এভিন লুইস, নিকোলাস পুরান ও রভম্যান পাওয়েলের উইকেট। ডেলানির সঙ্গে বাকিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৪৮ বলে অপরাজিত ৬২ রান করেন ব্র্যান্ডন কিং। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট নেন ডেলানি।
১৪৭ রান তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ডকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার স্টার্লিং এবং বালবার্নি। দুজন মিলে মাত্র ৭.৩ ওভারে ৭৩ রান তুলে নেন। ২৩ বলে ৩টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩৭ রান করে বালবার্নি ফিরলে ভাঙ্গে এজুটি। এরপর আর কোনো সুযোগ দেননি স্টার্লিং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের। ৪৮ বলে ২ ছক্কা ও ৬ চারের সাহায্যে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন স্টার্লিং। লর্কান টাকার দুটি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে ৩৫ বলে ৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ১৫ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আয়ারল্যান্ড।