মুক্তমত স্তব্ধ করতে অনন্তকে হত্যা : আদালত

চার আসামির ফাঁসি

| বৃহস্পতিবার , ৩১ মার্চ, ২০২২ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার রুদ্ধ করার পাশাপাশি ভীতি ছড়িয়ে দিতেই ৭ বছর আগে সিলেটে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যা করা হয়েছিল বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আদালত। সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব গতকাল বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকে আলোচিত এ মামলার রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)। হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় এ মামলার আরেক আসামি ব্লাগার শফিউর রহমান ফারাবীকে খালাস দেওয়া হয় রায়ে।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, হত্যাকারীরা একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী। তারা পরিকল্পিতভাবে অনন্তকে হত্যা করেছে। অনন্ত বিজয় বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল চিন্তার লোক ছিলেন। তিনি ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতেন। অনন্ত বিজয় দাশের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারকে প্রতিহত করার জন্য এবং তার লেখনীকে চিরতরে স্তব্ধ করার জন্য সন্ত্রাসী কায়দায় প্রকাশ্যে দিবালোকে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু বলেন, রায় ঘোষণার সময় আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং শফিউর রহমান ফারাবী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। আইনজীবী বলেন, এ ছাড়া আদালত প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। তিনি আরও বলেন, চারজনের মৃত্যুদণ্ডের রায়টি একটি যুগান্তকারী রায়। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তবে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল আহাদ বলেন, রায়ে প্রকৃত সত্য চাপা পড়ে গেছে। আসামিদের বেশিরভাগই এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। উচ্চ আদালতে আপিল করব।
প্রসঙ্গত, সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নূরানী আবাসিক এলাকার ২০১৫ সালের ১২ মে বাসার সামনে খুন হন ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় গণজাগরণ মঞ্চেরও সংগঠক ছিলেন। হত্যার পরদিন ২০১৫ সালের ১৩ মে তার বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রস্তুতি শুরু, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে চাঙা ভাব
পরবর্তী নিবন্ধ২২শ শয্যার পথে এগোল আরো একধাপ