মীরসরাইয়ে ২০ কিমি যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সংস্কার কাজ

মীরসরাই প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৮ মার্চ, ২০২২ at ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই অংশে সংস্কারের জন্য বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দিনভর অন্তত ২০ কিলোমিটার জুড়ে যানজট ছিল। উপজেলার মিঠাছরা থেকে মস্তাননগর অংশের সংস্কার কাজের জন্য বারইয়ারহাট বাজার থেকে মীরসরাই সদর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে দিনভর ছিল যানজট।
মহাসড়কে দূরপাল্লার যাত্রীরা দিনভর আটকে ছিল যানজটে। এ দিকে একলেনে দুইলেনের গাড়ি পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু অব্যবস্থাপনায় গাড়িগুলো এলোমেলো হয়ে যানজট আরো প্রকট হয়। হাইওয়ে পুলিশকে যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে দেখা যায়। সড়ক সংস্কারের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম থেকে মীরসরাই অংশে এখন নিত্য যানজট লেগে আছে। সকাল থেকে রাত অবদি যানবাহনের সারি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে এই পথে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া পণ্যবাহী গাড়িগুলো গন্তব্যে যথাসময়ে পৌঁছাতে না পারায় খরচের মাত্রাও বাড়ছে। কাঁচামাল যথাসময়ে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে না পারায় পথেই নষ্ট হচ্ছে। আবার যথাসময়ে যেতে না পারায় ব্যবসায়ীরা উপযুক্ত বাজার মূল্যও হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ। সরজমিনে দেখা যায়, মীরসরাইয়ের মিঠাছরা ও ঠাকুরদীঘি এলাকায় সড়কে চলমান সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারের লোকজন দুইটা আবার কখনো তিনটা ইউটার্ণ বন্ধ করে রাখছেন। ফলে যানজট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। এই যানজট কখনো ঢাকামুখী লাইনে আবার কখনো চট্টগ্রামমুখী লাইনে হচ্ছে। ঢাকামুখী ট্রাক চালক আমির হোসেন বলেন, সকালে চট্টগ্রাম থেকে ট্রাক ছেড়েছি। বড়তাকিয়ায় এসে আটকা পড়েছি প্রায় কয়েক ঘণ্টা। কখন এখান থেকে বের হতে পারবো তা জানি না। চট্টগ্রামপমুখী যাত্রীবাহী বাসের যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, সকালে কুমিল্লা থেকে রওয়ানা হয়েছি। ধুমঘাট এলাকায় যানজটে আটকা পড়েছি। কয়েক ঘণ্টা পর এখন বড়তাকিয়ায় এসেছি। বাকী পথ কখন যেতে পারব তা জানি না।
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ. কে. এম. শরফুদ্দিন বলেন, সড়ক সংস্কারের কাজে প্রায় এখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ঠিকাদারের ভলান্টিয়ার কম। ইউটার্ণগুলো নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ডিউটি করছে। এমনিতে আমাদের পুলিশ কম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার আধা কিলোমিটার কাজ করলে প্রায় ৫-৭ কিলোমটিার রাস্তা বন্ধ করে রাখে। ফলে যানজট দীর্ঘ হচ্ছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম অংশে ৬৬ কিলোমিটার সংস্কার কাজ করতে হবে। দৈনিক হাফ কিলোমিটার কাজ করতে পারছি। এই কাজ কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে আগামী অর্থ বছরে এই কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, সামনে বর্ষা মৌসুম আসছে। এখন যদি এই সংস্কার কাজগুলো করতে না পারি, তাহলে সড়কে গর্ত সৃষ্টি হলে তখন ভোগান্তি আরো বেশি হবে। সড়কের সংস্কার কাজ করতে গেলে একটুতো কষ্ট হবেই। তবে সাময়িক এই কষ্টকে মেনে নিয়ে সড়কের সংস্কার কাজে সহযোগিতা করতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান। অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসারের বিষয়ে তিনি বলেন, সবাইকে তো সহযোগিতার জন্য চিঠি দেয়া আছে। এ দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশেও গতকাল প্রায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর থেকে গোমতী সেতুর টোলপ্লাজা এলাকা পর্যন্ত এই যানজট দেখা দেয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস এবং শুক্র-শনিবার মিলে ১৭ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত টানা ছুটিতে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। সে কারণে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখেলনার ভিতরে ৬০ লাখ টাকার স্বর্ণবার, আটক ১
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র লাইলাতুল বরাত আজ