মাসে দেড় হাজার ‘চায়না ফরম’ সরবরাহের আশ্বাস দূতাবাসের

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:২০ পূর্বাহ্ণ

‘ফরমে’ আটকে থাকা চীন বাংলাদেশ বৈদেশিক বাণিজ্য অবশেষে গতি পাচ্ছে। চায়না ফরমের অবাধ সরবরাহ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছে চীন দূতাবাস। প্রতিমাসে দেড় হাজার ফরম সরবরাহ দেয়ার ব্যাপারে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আশ্বস্ত করেছে।
সূত্র বলেছে, চীন বাংলাদেশের প্রায় ৯৭ভাগ রপ্তানি পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের সাথে একটি ফরম পূরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পণ্য রপ্তানির পর বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ওই ফরমটি পূরণ করে চীনের আমদানিকারকের নিকট পাঠাতে হয়। ওই আমদানিকারক তা শুল্ক কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করলেই কেবল বিনাশুল্কে চালান ছাড় করা যায়। এই ফরমটি বাংলাদেশে ‘চায়না’ ফরম নামে অভিহিত। চীন বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও এই ফরমটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। চীনা দূতাবাস থেকে এই ফরমটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে দেয়া হয়। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ৮টি আঞ্চলিক অফিসে এই ফরম সরবরাহ দিয়ে থাকে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় একেবারে নগন্য সংখ্যক ফরম দেয়ার ফলে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা বহু পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না। অনেক পণ্য আটকা পড়ে রয়েছে চীনের বন্দরে। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক আজাদী গত ২২ নভেম্বর “‘ফরমে’ আটকা চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনের পর সংশ্লিষ্টরা সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেন। অবশেষে গতকাল চীনা দূতাবাস থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিমাসে ৫শ’ ফরম দেয়ার ব্যাপারে আশ্বাস প্রদান করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই ৫শ’ ফরম রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে দেয়া হবে। যার একটি অংশ চট্টগ্রাম পাবে।
সূত্র বলেছে, চট্টগ্রামে প্রতিমাসে কমপক্ষে পাঁচশ’ ফরমের দরকার। তা না দিয়ে দুই মাসে মিলে একশ’র মতো ফরম পাওয়া যেতো। দেশের প্রধান বন্দরসহ রপ্তানি বাণিজ্যে চট্টগ্রামের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। তাই প্রতিমাসে এখানে গড়ে ৫শ’ ফরম দরকার হয়। তা না দিলে এখানে সংকট লেগে থাকবে। তবে এখন মাসে পাঁচশ’ ফরম সরবরাহ দেয়া হলে তার একটি বড় অংশ চট্টগ্রামে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার পর চীন এই ফরমটি কেন নিয়ন্ত্রণ করছে তা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। চীন ফরমটি উন্মুক্ত করে দিলে চীন বাংলাদেশ বৈদেশিক বাণিজ্য অনেক বেশি গতিশীল হতো বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো চট্টগ্রামের পরিচালক শারমিন আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফরমের ব্যাপারে দূতাবাস থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে কিনা আমি জানি না। তবে এই ফরম নিয়ে আমাদের রপ্তানিকারকেরা অনেক সংকটে রয়েছেন। আমরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী ফরম দিতে পারি না। যা রপ্তানি ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি করছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।
ব্যবসায়ী নেতা এবং চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ প্রতি মাসে ৫শ’ ফরম সরবরাহের ব্যাপারে চীনা দূতাবাস সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাইকারিতে কমছে তেল চিনি ও গমের বাজার
পরবর্তী নিবন্ধএবার চট্টগ্রামে ২শ বেদে পেলেন করোনার টিকা