মার্কেট খুলল, প্রথম দিনে ক্রেতা কম

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলার প্রথমদিন নগরীর অধিকাংশ মার্কেটে ক্রেতার অপেক্ষায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের দেশব্যাপী লকডাউনের ঘোষণার সাথে বন্ধ হয়ে যায় সব মার্কেট। পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ আন্দোলনের হুমকি দিলে চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যেই মার্কেট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার। তবে গণপরিবহন না থাকায় সাধারণ ক্রেতারা মার্কেটমুখী হয়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এদিকে অনেক মার্কেটে ক্রেতা বিক্রেতাদের সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। অনেককে শপিং ব্যাগের পাশাপাশি মাস্কও হাতে নিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। আবার কিছু কিছু বিক্রেতাকে মাস্ক মুখে না দিয়ে কানের এক পাশে ঝুলিয়ে রেখে পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।
গতকাল নগরীর টেরীবাজার, নিউমার্কেট বিপণি বিতান, রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেন, জহুর হকার্স মার্কেট, বালি আর্কেড, কেয়ারি ইলিশিয়াম, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেক্স, স্যানমার ওশ্যান সিটি, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, আমিন সেন্টার, ভিআইপি টাওয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং মতি টাওয়ারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ক্রেতার অপেক্ষায় প্রহর গুণছিলেন। কিছু কিছু দোকানে অবশ্য বেশ কয়েকজন ক্রেতাকে দেখা যায়। এদেরই একজন রেহনুমা তাসমিয়া। ব্যক্তিগত গাড়িতে চেপে তিনি এসেছিলেন নগরীর আফমি প্লাজায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে মার্কেটে ভিড় বেড়ে যাবে এই আশঙ্কা থেকে আগেভাগে কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি। ঈদের দিন নতুন জামা না পরলে তো আর ঈদ মনে হয় না। নিজে না হয়, না কিনলাম। কিন্তু বাচ্চাদের জন্য তো কিনতে হবে।
নগরীর টেরীবাজারে কথা হয় গৃহিণী ফৌজিয়া সুলতানার সাথে। পরিবারের বৃদ্ধ মা বাবা এবং বাচ্চার জন্য ঈদের জামা কিনতে এসেছেন বলে জানান। অন্যদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঈদের বাজারে প্রত্যাশিত ক্রেতা আসেনি বলে জানিয়েছেন জহুর হকার্স মার্কেটের অলিদ ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী এম এম ইলিয়াছ উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রথমদিন যে রকম ক্রেতা আশা করেছিলাম, তার দেখা মেলেনি। হয়তো আজকে (গতকাল) খুব বেশি গরম পড়ছে তাই আসেনি। কারণ রোজা রেখে অনেকে মার্কেটে আসতে চায় না। বেশিরভাগ মানুষ ইফতারের পর মার্কেটে আসে। তবে এবার সরকারি বিধি নিষেধ থাকায় ইফতারের পর তো দোকান খোলা রাখা যাবে না।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রথমদিন ক্রেতা সমাগম খুব বেশি হবে না, এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় দফার কঠোর লকডাউন এখনো শেষ হয়নি। আগামী ২৮ এপ্রিল লকডাউন ওঠে গেলে তখন হয়তো ক্রেতারা মার্কেটমুখী হবেন। তারপরেও টুকিটাকি ক্রেতারা আসছেন।
তামাকুমণ্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল বলেন, সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা ব্যবসা শুরু করেছি। প্রত্যেক ক্রেতাকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুব্ধ করছি। আমরা মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষীদের বলে দিয়েছি, মাস্ক ছাড়া কাউকে যেন প্রবেশ করতে দেয়া না হয়। অর্থাৎ ‘নো মাস্ক, নো এন্ট্রি’। মার্কেট খোলার প্রথমদিন খুব বেশি ক্রেতা ছিল না। তবে এখনো যেহেতু সময় আছে, ধীরে ধীরে সমাগম বাড়বে।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলুল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, মূলত গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে জহুর হকার্স মার্কেটে ক্রেতা সমাগম কম ছিল। আমাদের মার্কেটে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষই বেশি আসে। এছাড়া ফুটপাতে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষ আসে কেনাকাটা করতে। তারপর মার্কেটের আশপাশের ক্রেতারা আসেন। গণপরিবহন চলা শুরু করলে ক্রেতা সমাগম বাড়বে। ব্যবসায়ীরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছেন বলে দাবি করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করলেন বাবুনগরী
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামেও রাত ৯টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা রাখার দাবি