মাধ্যমিকের বই বিতরণ ১২ দিনে

তিন দিন করে বিতরণ করতে হবে প্রতি ক্লাসের বই

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

এবার বই উৎসব না করে বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর বিকল্প উপায় নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। যদিও মাধ্যমিক পর্যায়ের বই বিতরণে গতকাল (সোমবার) পর্যন্ত লিখিত কোন নির্দেশনা পান নি বলে জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এ সংক্রান্ত লিখিত কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক হেনরী।
তবে বই বিতরণে নির্দেশনা জারি না হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে বলে মাউশি সূত্রে জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আজ (মঙ্গলবার) সংবাদ ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হতে পারে বলে মাউশির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। মাউশি সূত্রে জানা গেছে- কোন ধরনের জমায়েত না করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবার বই বিতরণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রণালয়। যা আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই নির্দেশনা আকারে জারি হতে পারে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- এবার ১২ দিন ধরে বই বিতরণ করতে হবে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। প্রতিটি ক্লাসের বই বিতরণ করতে হবে তিন দিন করে। সে হিসেবে ৪ ক্লাসের (৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির) বই বিতরণ করতে হবে ১২ দিনে। ১ জানুয়ারি থেকে এই বই বিতরণ শুরু হয়ে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তবে ৫ম শ্রেণি সংযুক্ত থাকা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো তিন দিন এ বই বিতরণ করতে হতে পারে।
আর এ বই বিতরণে কোন ধরণের জমায়েত করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আগে থেকেই ক্লাস ভিত্তিক শিডিউল তৈরি করে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের জানিয়ে দেবে। শিডিউল অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ক্লাসের শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এসে বইগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাউশি সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে জারিকৃত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায়ও বলা হয়েছে- প্রাথমিক পর্যায়ে বই উৎসবের পরিবর্তে এবার শুধু বই বিতরণ করা হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এসে স্কুল থেকে বইগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে। কোন ধরণের জমায়েত করা যাবে না। একেক দিন একেক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে প্যাকেটজাত বই তুলে দেয়া হবে। ভিন্ন ভিন্ন দিনে ক্লাস ও রোল অনুযায়ী শিডিউল তৈরি করবে স্কুলগুলো। নির্ধারিত দিনের সুনির্দিষ্ট সময়ে শিডিউলভুক্ত ক্লাসের শিক্ষার্থীরা এসে বই সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, বই বিতরণ উপলক্ষে স্কুলে কোন ভাবেই জমায়েত করা যাবেনা। জমায়েত না করার জন্যই একাধিক দিনে বই বিতরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে কোন মতেই ঝুঁকিতে না পড়ে। তবে কয়দিনে বই বিতরণ করা হবে, তা সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিছু স্কুল আছে, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। আবার তুলনামূলক কম শিক্ষার্থীর স্কুলও আছে। এক্ষত্রে দুটি স্কুলের জন্য দুধরনের সিদ্ধান্ত হবে।
শহীদুল ইসলাম বলেন, স্কুলগুলোতে আগে থেকেই প্রতিজনের বই প্যাকেট/বাধাঁই করে রাখা হবে। স্কুলের শিক্ষকরা শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থীদের তালিকা করে আলাদা আলাদা সময় দিয়ে একটি সিডিউল করবেন। ওই সিডিউল অভিভাবকদের ফোনে জানিয়ে দেয়া হবে। নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এসে বইগুলো নিয়ে যাবে। মোটকথা স্কুলে একই সময়ে যাতে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের জমায়েত না হয়, সেভাবেই বই বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। বই উৎসবের তো প্রশ্নই আসেনা। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সকল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে স্কুল সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলেও জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে আরো ২৭ মৃত্যু,শনাক্ত ৯৩২ জন
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরো ১৫৪ জনের করোনা শনাক্ত