মহিউদ্দিন চৌধুরীর মত কর্মীবান্ধব নেতা বিরল

চট্টগ্রামে স্মরণসভায় হানিফ ।। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী অত্যন্ত কর্মীবান্ধব, মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। আমি যতটা দেখেছি কাছ থেকে বা দূর থেকে তার মত কর্মীবান্ধব নেতা এই বাংলার জমিনে দেখিনি। এই চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এম এ আজিজ, জহুর আহমেদ চৌধুরী, আখতারুজ্জামান বাবু, আতাউর রহমান কায়সারসহ অনেকেই রাজনীতি করেছেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী এই বীর চট্টলার সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন। অন্য কারো সাথে তার তুলনা চলে না। তার তুলনা তিনি নিজেই।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
হানিফ বলেন, আমরা যখন দেখি জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার গত ১৩ বছরে দেশকে অগ্রগতির একটি ধারায় নিয়ে এসেছেন, চরম অস্থিতিশীল দেশ থেকে আজকে যখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন, তখনই একটি মহল আন্দোলন সংগ্রামের নামে জ্বালাও পোড়াও করে ষড়যন্ত্র করছে। আন্তর্জাতিক চক্র মিলে যখন আবারো নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তখনই কিন্তু মহিউদ্দিন ভাইয়ের কথা বার বার মনে আসে। মানুষের আস্থা ছিল বলেই এতদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার নিরবছিন্নভাবে ক্ষমতায় থেকে দেশের উন্নয়ন করতে পেরেছেন। আপনারা দেখেছেন বিএনপি সাম্প্রতিককালে একটা ইস্যু নিয়ে মাঠে আন্দোলন শুরু করছে। তাদের ইস্যুটা কি? তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে হবে। প্রতিদিন আমরা দেখি বিদেশে পাঠান, বিদেশে পাঠান বলে চিৎকার করছে- কিন্তু কেন? কোন যুক্তিতে কোন আইনে বলে? আপনারা বিদেশে পাঠাতে চাচ্ছেন সে ব্যাখ্যা কী?
হানিফ বলেন, হঠাৎ করে আমেরিকা থেকে আমাদের দেশের দুটি বাহিনীর প্রধানকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হল। আমরা অবাক হলাম। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি কি? তারা নাকি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। এটা আসলে একটি গভীর চক্রান্তের-ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করছেন সবাই। এই নিষেধাজ্ঞার কথা শুনে মির্জা ফখরুল ইসলাম খুশিতে লাফাচ্ছেন। মনে করছেন- এবারেই বোধয় সরকার চলে যাবে। আমরা আজকে এক্ষেত্রে পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই- আজকে যাকে নিয়ে আমরা স্মরণসভা করছি। যার ছবি আমার চোখের সামনে। এই বীর চট্টলার বীর সন্তান মহিউদ্দিন চৌধুরী সকলের মাঝে আছেন। এই চট্টগ্রামের হাজার হাজার নেতাকর্মী অতীতে যারা বিএনপির দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। বিএনপির অপশক্তিকে দমন করে বার বার জয় ছিনিয়ে এনেছেন। সেই অপশক্তিকে চট্টগ্রাম থেকে আবারো রুখে দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কোনো অপশক্তি আমাদেরকে পরাস্ত করতে পারবে না।
প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সন্তান-শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, দলের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা এখন খুব বেশি প্রয়োজন। কেননা দুবছর পর আবারো জাতীয় নির্বাচন। এরমধ্যে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আন্তর্জাতিক এবং দেশীয়ভাবে নানান ধরনের ষড়যন্ত্র কিন্তু চলছে। এই ষড়যন্ত্রগুলো কিন্তু শক্তিশালীভাবে রূপ নিচ্ছে। কয়েকদিন আগে আপনারা দেখেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তদবির করে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আপনারা জানেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটা তদবিরের রাষ্ট্র। ঐখানে টাকা-পয়সা দিয়ে তদ্বির করা যায়। ঐখানে এটা আইনত বৈধ।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রাউজান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা শফর আলী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযাদের দেশে গণতন্ত্র হুমকির মুখে তারা অন্যকে সবক দেয়ার অধিকার রাখে?
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা