মশার কয়েল থেকে আগুন, দুই সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৯ মে, ২০২৩ at ৪:৩২ পূর্বাহ্ণ

দেড় বছর বয়সী শিশু মারুফ মারা যাওয়ার দুই ঘণ্টার ব্যবধানে মারা গেছেন তার মা নূর নাহার বেগম (৩০) ও বোন ফারিয়া ()। হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায়। মশার কয়েল থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে দুই সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ প্রতিবেশী মো. ঈমাম উদ্দিন (২৩) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বায়েজিদ থানার পূর্ব শহীদ নগর এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বড় একটি আধা পাকা ঘরের মধ্যে টিনের বেড়া দিয়ে ছয়টি কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল। এগুলোয় নিম্ন আয়ের পরিবারের লোকজন ভাড়া থাকতেন। এর মধ্যে একটি কক্ষে দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন নূর নাহার।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, শহীদ নগরে তোতা মিয়া নামে একজনের বসতঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়। পুলিশ দুটি বসতঘর থেকে চারজনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মা ও তার দুই শিশু সন্তান মারা গেছেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মশার কয়েল থেকে সৃষ্ট আগুন বিদ্যুতের তারে লেগে শর্টসার্কিট হয়। এতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমন্ত থাকায় ঘরগুলোর লোকজন প্রথমে বের হতে পারেনি। এতে তারা দগ্ধ হয়েছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো কাঁচাঘর। ঘরগুলোতে বিদ্যুতের লাইনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।

আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা চিত্ত রঞ্জন বৈদ্য বলেন, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট যায়। তবে সরু রাস্তা হওয়ায় কেবল একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যেতে পারে। এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ছয়জন মালিকের ৬টি টিনের বসতঘর পুড়ে গেছে। এসব ঘরের একটিতে আগুনে দগ্ধ হয় চারজন। ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই দগ্ধ চারজনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যান পুলিশ ও স্থানীয়রা। তিনি বলেন, মশার কয়েল থেকে বিদ্যুতের তারে আগুন লেগে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল।

মেডিকেল কর্তৃপক্ষ থেকে জানা গেছে, সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে। তবে তিনি বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ওই ঘরে দুটি সিলিন্ডার পাওয়া গেলেও সেগুলো অক্ষত ছিল।

চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান মো. রফিক উদ্দিন আহমদ জানান, আগুনে দগ্ধ মা ও তার দুই সন্তানকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের শরীরের ৯০ ভাগ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। সকাল ৮টার দিকে মারুফ মারা যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা ও বোনেরও মৃত্যু হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ সংঘাত চায় না : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধএক ব্যক্তির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড