মওদুদ আহমদ আর নেই

| বুধবার , ১৭ মার্চ, ২০২১ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, প্রবীণ আইনজীবী মওদুদ আহমদ মারা গেছেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খুব বেদনার সংবাদ, মওদুদ সাহেব আর নেই। ৮১ বছর বয়সী মওদুদ কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত চরিত্র মওদুদ আহমদ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। জিয়াউর রহমানের সময়ে তিনি উপপ্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে এইচ এম এরশাদের সময়ে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করেন। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এবং বুকে ব্যথা অনুভব করায় গত ৩০ ডিসেম্বর তাকে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭ জানুয়ারি তার হৃদযন্ত্রে পেস মেকার বসানো হয়।
মওদুদ আহমদের একান্ত সহকারী মোমিনুর রহমান সুজন বলেন, স্যার হাসপাতালে আইসিউতে ছিলেন। গত কয়েকদিন ধরেই তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন ছিল। ফুসফুসে পানি জমা হচ্ছিল। তাতে অঙিজেন গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়। পাশাপাশি উনার কিডনি জটিলতাও ছিল, ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছিল।
প্রবীণ এই আইনজীবীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন।
১৯৪০ সালে নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় মওদুদ আহমদের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে তিনি যুক্তরাজ্যে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল ডিগ্রি নেন। পরে দেশে ফিরে যুক্ত হন আইন পেশায়। কবি জসীমউদ্‌দীনের জামাতা মওদুদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মপক্ষ সমর্থন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাকে প্রথম পোস্ট মাস্টার জেনারেল করা হয়। পরে দেশের প্রথম সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগ দেন। বিএনপি গঠনে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। জিয়ার মৃত্যুর পর মওদুদ সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের হাত ধরেন। এরশাদের পতনের পরও জাতীয় পার্টিতে ছিলেন মওদুদ। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তিনি বিএনপিতে ফেরেন। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে তিনি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মওদুদ আইন ও সমকালীন রাজনীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। স্বায়ত্বশাসন থেকে স্বাধীনতা, বাংলাদেশ : শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ – প্রেক্ষাপট : বাংলাদেশের রাজনীতি ও সামরিক শাসন, তার উল্লেখযোগ্য বই।
শোক প্রকাশ : ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, গোলাম আকবর খোন্দকার, বেগম রোজী কবির, এস এম ফজলুল হক, মাহবুবের রহমান শামীম, ডা. শাহাদাত হোসেন, আবুল হাশেম বক্কর, আবু সুফিয়ান, মোস্তাক আহমেদ খান শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া এলডিপির অলি আহমেদও প্রকাশ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধজন্মনিবন্ধন সনদ নিতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ