জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে এক তরুণ আত্মসমর্পণ করেছেন, যিনি নিজেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য বলে দাবি করেছেন পুলিশের কাছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ২৬ বছর বয়সী ওই তরুণের নাম প্রকাশ করেনি। তিনি এখন উত্তরখান থানা হেফাজতে রয়েছেন বলে ৯৯৯–এর মিডিয়া শাখার পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তাদের কাছে একটি কল আসে। সেখানে ওই তরুণ নিজেকে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য বলে দাবি করেন।
ওই তরুণের ভাষ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লার বাড়ি থেকে টাকা–পয়সা চুরি করে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি ঢাকার বসুন্ধরা, উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকার বিভিন্ন মেসে ছিলেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য তার কক্সবাজারে যাওয়ার কথা ছিল। এক পর্যায়ে তিনি ‘ভুল’ বুঝতে পেরে পালিয়ে উত্তরখান থানা এলাকায় এক ব্যক্তির আশ্রয়ে যান। খবর বিডিনিউজের।
পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু ভয় পাচ্ছিলেন তার দলের সদস্যদের হাতে ধরা পড়লে হত্যার শিকার হতে পারেন। এমন সব তথ্য জানিয়ে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করে মঙ্গলবার দুপুর পৌনে বারোটায় তিনি ৯৯৯–এ ফোন করেন।
সে সময় কল সেন্টারে দায়িত্বরত কনস্টেবল জয় বিশ্বাস কলটি ধরে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তরখান জোনের অতিরিক্ত উপ–কমিশনারকে জানিয়ে দেন। খবর পেয়ে উত্তরখান থানা পুলিশের একটি দল ফোনে পাওয়া বিবরণ অনুযায়ী উত্তরখানের কোটবাড়ি আটিপাড়া এলাকায় যায়। সেখান থেকে ওই তরুণকে তারা উত্তরখান থানায় নিয়ে যান। আনোয়ার সাত্তার বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বেশ কয়েকজন তরুণের ঘর ছাড়া তদন্তে নেমে ২০২২ সালের অক্টোবরে র্যাব নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার কথা জানায়। র্যাব বলছে, হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি ও আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু সদস্য ২০১৭ সালে নতুন এই উগ্রবাদী সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করে। পরে ২০১৯ সালে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে।
এদিকে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ নামে পাহাড়ের একটি সশস্ত্র দলের তৎপরতার খবর বেশ কয়েক মাস ধরেই আলোচনায় আসছিল। পাহাড়িরা কেএনএফ সংগঠনটিকে ‘বম পার্টি’ নামে চেনে। নিজেদের তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের অনগ্রসর জনজাতিগুলোর ‘প্রতিনিধিত্বকারী’ হিসেবে তুলে ধরে। জামাতুল আনসারের কয়েক ডজন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর র্যাবের তরফ থেকে বলা হয়, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে পাহাড়ের দল বম পার্টি পৃষ্ঠপোষকতা করছে। পাহাড়ে তাদের প্রশিক্ষণও চলছে।