অবসরে গেলে যা পাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

| বুধবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে দায়িত্বভার দিয়ে আগামী ২৩ এপ্রিল অবসরে যাবেন দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসা মো. আবদুল হামিদ। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদে দায়িত্ব পালনের পর অবসরে গেলে আইনে নির্ধারিত বিভিন্ন সুযোগসুবিধা পাবেন তিনি। ‘রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইনে’ সাবেক রাষ্ট্রপতিরা কী কী সুযোগসুবিধা, কীভাবে পাবেন তা নির্ধারণ করা আছে।

অবসরভাতা : আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে ছয় মাস দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগ করলে অথবা ওই পদে মেয়াদ শেষ করলে, রাষ্ট্রপতি হিসাবে পাওয়া সর্বশেষ মাসিক বেতনের ৭৫ শতাংশ হারে তিনি আমৃত্যু মাসিক অবসরভাতা পাবেন। রাষ্ট্রপতিদের বেতন ও সুযোগসুবিধা সংক্রান্ত ‘দি প্রেসিডেন্টস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫ (মে ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী বর্তমানে রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ৯০ হাজার টাকা অবসরভাতা পাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। কোনো সাবেক রাষ্ট্রপতি ‘রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইনের’ অধীনে অবসরভাতা গ্রহণ করে মারা গেলে, তার বিধবা স্ত্রী অথবা বিপত্নীক স্বামী তার প্রাপ্য মাসিক অবসরভাতার দুইতৃতীয়াংশ হারে আমৃত্যু মাসিক অবসরভাতা পাবেন।

আনুতোষিক : অবসরভাতা গ্রহণের যোগ্য কোনো সাবেক রাষ্ট্রপতি অবসরভাতার পরিবর্তে আনুতোষিক গ্রহণ করতে চাইলে, সেই সুযোগও রাখা হয়েছে ‘রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইনে’। সেক্ষেত্রে অবসরভাতার যোগ্য বিবেচিত হওয়ার তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে অবসরভাতার পরিবর্তে আনুতোষিক গ্রহণের কথা জানাতে হবে। আনুতোষিক হল, অবসরভাতার পরিবর্তে গ্রহণ করা এককালীন অর্থ। আনুতোষিকের পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়ে আইনে বলা হয়, আনুতোষিকের পরিমাণ এক বছরের জন্য প্রদেয় অবসরভাতার তত গুণ হবে, যত বছর কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন।

অন্যান্য সুবিধা : অবসরভাতা বা আনুতোষিকের বাইরে সাবেক রাষ্ট্রপতিরা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তিগত সহকারী ও একজন অ্যাটেন্ডেন্ট এবং সরকার থেকে দাপ্তরিক ব্যয় পান তারা। এই ব্যয়ের মোট বাৎসরিক পরিমাণ সরকার নির্ধারণ করে থাকে। একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসাসুবিধাদির সমপরিমাণ চিকিৎসাসুবিধা পাবেন একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি। সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য তারা বিনামূল্যে সরকারি যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন। আবাসস্থলে একটি টেলিফোন সংযোগ এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত ওই টেলিফোনের বিল পরিশোধ থেকে অব্যাহতি পাবেন। একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট পাবেন একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি। দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের সময় সরকারি সার্কিট হাউস বা রেস্ট হাউসে বিনা ভাড়ায় অবস্থান করতে পারবেন তিনি। মন্ত্রীর সমান চিকিৎসা সুবিধা, কূটনৈতিক পাসপোর্ট এবং সরকারি সার্কিট হাউজ বা রেস্ট হাউজে বিনাভাড়ায় থাকার সুবিধা আইন অনুযায়ী সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী বা স্বামীও পাবেন।

যেসব কারণে অবসরভাতা পান না সাবেক রাষ্ট্রপতি : রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি যদি এমন কোন দপ্তরে, আসনে, পদে বা মর্যাদায় দায়িত্ব পালন করছেন বা করেছেন, যার জন্য তিনি সরকারি তহবিল হতে বেতন বা অন্য কোন সুবিধা পাচ্ছেন বা পেয়েছেনতাহলে তিনি অবসরভাতা পাবেন না। অবসরভাতার যোগ্য হওয়ার পরে আদালত কর্তৃক ‘নৈতিক স্খলনজনিত’ কোনো অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হলেও সাবেক রাষ্ট্রপতি অবসরভাতা পাবেন না। এছাড়া, অসাংবিধানিক পন্থায় বা অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট এমন ঘোষণা দিলেও অবসরভাতার সুযোগ বঞ্চিত হবেন একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভুল বুঝে ৯৯৯-এ ফোন, তরুণ জঙ্গির আত্মসমর্পণ
পরবর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ