ভাষাবিজ্ঞানী মনসুর মুসা

ড. শ্যামল কান্তি দত্ত | শুক্রবার , ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

মুসা, মনসুর বাঙালি অধ্যাপক ও ভাষাবিজ্ঞানী। তাঁর পুরো নাম আবুল মনসুর মুহম্মদ আবু মুসা (১৯৪৫-) যিনি মনসুর মুসা নামে পরিচিত। জন্ম : ৩১ শে জুলাই ১৯৪৫ (শিক্ষাসনদ অনুযায়ী) ধর্মপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম। তাঁর পিতা আবদুস সালাম, মাতা সবিলা খাতুন । মনসুর মুসা জাহানপুর হাই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন (১৯৬০) উত্তীর্ণ হন। তিনি চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট (১৯৬২) পাস করে একই কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় (১৯৬৫) দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায়ও (১৯৬৬) তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম হন। ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কলার হিসেবে তিনি যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শ্রীলঙ্কার সিংহলি ভাষা পরিকল্পনা’ নিয়ে গবেষণা করে এমফিল ডিগ্রি (১৯৭৮) লাভ করেন। এছাড়াও মনসুর মুসা ভাষাতত্ত্বঅধ্যয়ন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে, সিঙ্গাপুরে আর দক্ষিণ কোরিয়ায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা (১৯৭২২০১০) করেছেন; আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটএর পরিচালক এবং দুই মেয়াদে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (১৯৯৫১৯৯৭ ও ২০০২২০০৫) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভাষাবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তাঁর আগ্রহ আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়: সমাজভাষাবিজ্ঞানে, মনোভাষাবিজ্ঞানে এবং ভাষাপরিকল্পনায়। মানুষের ভাষাসমস্যা সম্পর্কে তিনি বহু প্রবন্ধ লিখেছেন। তুর্কীভাষা আন্দোলন, শ্রীলঙ্কার ভাষাসমস্যা, আসামের ভাষাদাঙ্গা, বাঙলা ভাষা ও রাজনীতি, প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকের ভাষাতাত্ত্বিক মূল্যায়ন ইত্যাদি তাঁর গবেষণামূলক প্রবন্ধ দেশে বিদেশে সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে মনসুর মুসা ভাষাতত্ত্ব ও ভাষাবিজ্ঞান অধ্যয়নঅধ্যাপনা ও গবেষণায় নিবিড়ভাবে নিয়োজিত। ভাষানীতি, ভাষাপরিকল্পনা ও ভাষা ব্যবস্থাপনার কাজে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে তিনি ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব ও অবয়বতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব ও অর্থতত্ত্ব, দ্বিভাষিকতা ও উপভাষাতত্ত্ব, শব্দমানচিত্র ও প্রায়োগিক ভাষাতত্ত্ব, অনুবাদতত্ত্ব ও রূপান্তরতত্ত্ব এসব ক্ষেত্রে বিচরণ করেছেন। অধুনা ভাষাবিজ্ঞানের সম্প্রসারিত অঙ্গন বিশেষ করে স্নায়বিক ভাষাবিজ্ঞান ও শিক্ষামূলক ভাষাতত্ত্ব নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন। বাংলা কম্পিউটার ভাষাবিজ্ঞানের দিকনির্দেশনার কাজ করেছেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে, বিশেষজ্ঞ হিসেবে।

ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে: ভাষা পরিকল্পনা ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৮৪)। বইটিতে দশটি প্রবন্ধের মাধ্যমে ভাষা পরিকল্পনা ও ভাষানীতি নিয়ে দেশবিদেশের পরিস্থিতি, বাস্তবতা, সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন। প্রথমে বাংলা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা আলোচনা করেন মুসা, দ্বিতীয় প্রবন্ধে বাংলাদেশের ভাষা পরিস্থিতির সাথে পাঠককে পরিচিত করিয়ে নেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ, তুর্কীভাষা আন্দোলন, শহীদুল্লাহর ভাষাতাত্ত্বিক গুরুত্ব বর্ণনা করে পাঠককে নিয়ে যান ভাষার বিশুদ্ধতা, ভাষা পরিকল্পনা, বাংলা ভাষা প্রচলনের নির্দেশনা এবং প্রচলন সংক্রান্ত বিবেচনা বিশ্লেষণে। বাংলা পরিভাষা: ইতিহাস ও সমস্যা (১৯৮৫) বইয়ে বাংলা পরিভাষার ইতিহাস ও সমস্যাকে দৃঢ়তার সঙ্গে তুলে ধরেছেন তিনি। তার সঙ্গে পরিভাষা সৃজনে যে সব বাঙালি কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন তাঁদের কথাও বলেছেন (বিশ্বাস, ২০১৩: ১৩৮)। ভাষা পরিকল্পনার সমাজভাষাতত্ত্ব (১৯৮৪) বইটি বাংলা একাডেমির অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লেখা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উঁচুপর্যায়ে সমাজভাষাতত্ত্ব ও ভাষাপরিকল্পনা পড়াতে গিয়ে অধ্যাপকের অন্বেষা আলোচ্য বইয়ে বাংলা ভাষায় প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ যে সচেতনভাবে ভাষাপরিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে তাই এ বইয়ের আটটি অধ্যায়ের আলোচনায় উঠে এসেছে।

মনসুর মুসা আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হবার পর ভাষাচিন্তা: প্রসঙ্গ ও পরিধি (১৯৯১) বইটি প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রবন্ধগুলোর বেশিরভাগ লেখা হয়েছে লেখক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে শ্রেণিকক্ষে বাঙালি শিক্ষার্থীদের ‘মনোভাষাবিজ্ঞান’ ও ‘সমাজভাষাবিজ্ঞান’ বিষয়ে পাঠদানের প্রয়োজনীয়তা থেকে। এ বইয়ে ভাষাবিজ্ঞানের কিছু প্রচলিত ধারণা ও সংজ্ঞার পুনর্বিবেচনাও করেছেন তিনি। পাশ্চাত্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতো ভাষার প্রাথম্যকে স্বীকার করে নেওয়ার পক্ষেও মুসা যুক্তি তুলে ধরেছেন। সর্বোস্তরে বাংলা প্রচলনে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কী ভূমিকা পালন করেছে তাঁর সলুক সন্ধান করে লিখেছেন, ‘বাংলা প্রচলন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা’ শিরোনামে প্রবন্ধ। ড. মুহম্মদ এনামুল হকের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে পরিভাষা তালিকা (মার্চ, ১৯৭৪) প্রণয়ন করেছিলেন তার আলোচনার পাশাপাশি পরিশিষ্টে ফাইলবন্দী পরিভাষা ও সনদপত্রের তালিকা দুটি প্রকাশ করে বইটির গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন ভাষাগবেষকদের কাছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত পাণ্ডুলিপি (১২ খণ্ড, ১৩৯০ বাং.) জার্নালে প্রথম প্রকাশিত এ প্রবন্ধে তিনি বঙ্গবন্ধুর নাম না নিলেও স্বীকার করে নেন: ‘তবে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর এসব ব্যাপার চাপা পড়ে যায়। বোঝা যায় বাংলা প্রচলন কর্ম রাজনৈতিক আবহাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে আছে’ (মুসা, ১৯৯১: ১০৪)। বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা (১৯৯৬) বইয়ে উনিশটি প্রবন্ধকে চারটি গুচ্ছে বিভক্ত করে প্রকাশ করা হয়েছে। গুচ্ছগুলোর শিরোনাম: ‘বাঙলাভাষার কথা’, ‘বাঙলা শব্দের কথা’, ‘বাঙলাভাষার শৈলীর কথা’ এবং ‘বাঙলাভাষা ও অন্যান্য বিবেচনা’। বইটিতে মুসা দেখিয়েছেন যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা হলেও ‘বহুরূপী বাঙলা এখনো বহু বিভ্রান্তির যাঁতাকলে আবদ্ধ হয়ে আছে’। বাংলা বানানটিতে ঙ/ং বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘এসব যুক্তি এবং পাল্টাযুক্তি ব্যক্তির পক্ষপাতের সঙ্গে জড়িত, ভাষার শুদ্ধাশুদ্ধির সঙ্গে জড়িত নয়’। এবিষয়ে আরও বিস্তৃত বিশ্লেষণ করে তিনি লেখেন: বানান: বাংলা বর্ণমালা পরিচয় ও প্রতিবর্ণীকরণ (২০০৭) নামের বই। এখানে তিনি দেখান, ‘বাংলা ভাষায় শব্দের জাতবিচার সম্পর্কিত তাত্ত্বিক সমস্যাই বানান নিয়মের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। ফলে তৎসম ও অতৎসম দ্বিভাজন ব্যবহার করে যে বানানের নিয়ম বিধিবদ্ধ করা হয়েছে তা বিধান হিসেবে সঠিক হয়নি’ (মুসা, ২০০৭: ১৬)। একইভাবে বিদেশী শব্দের প্রতিবর্ণীকরণের নীতিমালা না থাকায় কিংবা বৈজ্ঞানিক ধারণার অভাবে কীভাবে বাংলা ভাষার লৈখিক রূপে নৈরাজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তার স্বরূপ তিনি বিশ্লেষণ করেছেন।

বাংলা ভাষায় প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক প্রথম পূর্ণাঙ্গ বই লেখেন ভাষাবিজ্ঞানী মনসুর মুসা। প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞানের রূপরেখা কী হতে পারে সেসম্পর্কে শ্রেণিকক্ষে প্রদত্ত ভাষণের নোটই প্রায়োগিক ভাষাতত্ত্বের রূপরেখা (২০১৬) । এবইয়ে তিনি দেখান যে, Applied Linguistics বা প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞান ভাষাবিজ্ঞানের কোনো শাখাও নয়, উপশাখাও নয় বরং সার্বিক ভাষাবৈজ্ঞানিক অগ্রগতির সম্মিলিত নির্যাসন (abstraction)। ধ্বনিবিজ্ঞান কিংবা বাক্যতত্ত্ব, ভাষাঅর্জন কিংবা বাগর্থতত্ত্ব ইত্যাকার বিষয়ে যে সব অনুসন্ধিৎসাজাত আবিষ্কার সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর প্রয়োগই হচ্ছে প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞান। প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ও পরিধি পর্যালোচনা করতে অন্তত দুটি বিশেষত্ব মনে রাখা প্রয়োজন: প্রথমত, এটা ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা থেকে আহরিত অন্তর্দৃষ্টির প্রয়োগ। দ্বিতীয়ত, এটা ভাষা সংশ্লিষ্ট মানবীয় কিংবা সামাজিক কিংবা অন্য কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। সহজ কথায় যেসব ক্ষেত্রে ভাষিক মিথক্রিয়া (Interaction) হয়, তার সবই প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ও পরিধির মধ্যে আসে (মুসা, ২০১৬: ১৫)। মনসুর মুসার পাণিনি, চমস্কি ও তারপর (২০১৭) বইয়ের প্রবন্ধগুলো ভাষাবিজ্ঞানের ত্রিমাত্রিক বিকাশের বিবরণ। একদিকে বৈদিক ঐতিহ্যের ধীমান সাধক পাণিনি, অন্যদিকে আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের তীক্ষ্‌ণধী দিকনির্দেশক নোয়াম চমস্কি। এদুজনের অনুসারী থাকলেও দেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে ভাষাবিজ্ঞানের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ঘাটতির ফলে বঙ্গীয় ভাষাঅঞ্চল যে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত তার স্বরূপ সন্ধান আছে বইটিতে। তিনটি পর্বে ষোলোটি প্রবন্ধে বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পর্বগুলোর শিরোনাম: ‘ব্যাকরণ ও বৈয়াকরণ’, ‘ভাষা ও ভাষাতত্ত্ব’ এবং ‘ভাষাভাবনা’। বিদেশিদের বাংলা ভাষা শিক্ষার জন্য তিনি প্রণয়ন করেন ইলিমেন্টারি স্টাকচার্ড টেক্সটস ইন বেঙ্গলি (১৯৯৬)। এছাড়াও তিনি সম্পাদনা করেছেন: বাংলা ভাষা (১৯৭৩), বাঙলাদেশ (১৯৭৪), মুহম্মদ এনামুল হক রচনাবলী (১ম ৫ম খণ্ড)। বাঙালির বাঙলাভাষা চিন্তা (১৯৯৪), বাঙলা ধ্বনিমূল (২০১০) ইত্যাদি। তাঁর যৌথ সম্পাদনা : জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের স্তরভিত্তিক শব্দভাণ্ডার, বিজ্ঞান পরিভাষাকোষ (২০০৭), বাঙলায় প্রচলিত ইংরেজি শব্দের অভিধান (২০০২), জাতীয় গ্রন্থনীতি (১৯৯২), শিশু বিশ্বকোষ ইত্যাদি। তাঁর লিখিত জীবনীগ্রন্থ : মুহম্মদ আবদুল হাই ; মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ ; মুহম্মদ এনামুল হক। জীবনীগ্রন্থ রচনার সময়েও তিনি ভাষাবিজ্ঞানীবৈয়াকরণগণকেই বেছে নিয়েছেন। সমাজভাষাবিজ্ঞান শাখায় তাঁর অধিকার তাঁকে ভাষাব্যবহার সমস্যা ও ভাষাপরিকল্পনার মতো দুরূহ জগতে টেনে এনেছে (মনিরুজ্জামান, ২০৭: ১৩)। মনসুর মুসার নিরলস অধ্যাপনাগবেষণা, বিশেষত বাস্তবতার নিরিখে ভাষাতত্ত্বচর্চা এবং বাংলা ভাষায় প্রায়োগিক ভাষাবিজ্ঞানে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশের বাইরেও বিভিন্ন দেশের ভাষাসমস্যা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানে ও বিদ্যায়তনিক সংস্থায় গবেষণায় আত্মনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রবন্ধ প্রকাশের মধ্য দিয়ে বর্তমানবিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষাবিজ্ঞানীগণের সাথে তিনি এক পঙ্‌ক্তিতে ঠাঁই পান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযতদিন বাঁচবো বান্দরবানবাসীর সেবা করে যাবো
পরবর্তী নিবন্ধআমি আমার পাঠকদের নিরাশ না করার যথাসাধ্য চেষ্টা করি: হারুকি মুরাকামি